Happenings And Stories
What Else Happened |
|
S. M. Zillur Rahman,
16/
911
|
ভ্রমণে ভ্রমণে বরিশালএস এম জিল্লুর রহমান (১৬/খ/৯১১) ইমদাদ ভাইয়ের আবাসস্থল অস্ট্রেলিয়ার সিডনি। বয়স প্রায় ৭০। কিছুদিন আগ পর্যন্ত তিনি অস্ট্রেলিয়ায় ইমিগ্রেশন বিভাগে চাকুরীরত ছিলেন। এখন অবসরে আছেন। গত ০৬-০৮-২২ তারিখ তিনি ঢাকায় বেড়াতে আসেন এবং আমাদের কজনকে তার বাসায় ব্রেকফাস্টের নিমন্ত্রণ করেন। যথারীতি আমরা সবাই তার বাসায় হাজির। সেখানে তিনি সবাইকে বরিশাল ভ্রমনের আমন্ত্রণ জানান। বস্তুত, প্রায় ছয় মাস পূর্বেই ইমদাদ ভাইয়ের বরিশাল ভ্রমনের পরিকল্পনা ছিল। বরিশালের নিয়াজ ভাই সেচ্ছায় বরিশাল ভ্রমনের ব্যবস্থাপনার কথা জানান। সেমতে আমাদের মাঝে আটজন ১৮-০৮-২২ তারিখ বরিশাল ভ্রমণে সম্মত হই। সার্বিক তত্বাবধানে থাকবেন নিয়াজ ভাই। পরিকল্পনা অনেকটা এরকম। ১ম দিন বরিশালে পৌঁছে আমরা আমাদের কলেজের ৪র্থ ইনটেকের শেলি ভাইয়ের পরিবারের প্রতিষ্ঠিত একটি স্কুল পরিদর্শন করবো। বিকেলে বরিশালের সাতলা নামক একটি স্থানে লাল শাপলার বিল ভ্রমণ করবো এবং রাতে আমাদের খুবই শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মি: অসীম কুমার দেওয়ারী স্যারের বাসায় যাব। ২য় দিন দুপুর বারোটায় স্বরুপকাঠি গিয়ে সেখান থেকে ট্রলার বা ছোট লঞ্চে করে ঝালকাঠির বিখ্যাত ভিমরুলি ভাসমান পেয়ারা মার্কেট ভ্রমন এবং রাতে একটি ডিনারে অংশগ্রহণ করবো। ৩য় দিন সবাই সুস্থ থাকলে পায়রা সমুদ্রবন্দর, কুয়াকাটা এবং শেখ হাসিনা সেনানিবাস ভ্রমন এবং পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফিরে আসবো। ভ্রমন সঙ্গী আমরা ইমদাদ ভাই (১ম ইনটেক), নাফিজ ভাই (২য় ইনটেক), হাকিম ভাই (২য় ইনটেক), নিয়াজ ভাই (১১ ইনটেক) রানা ভাই (১১ ইনটেক), তিতুমীর (১৮ ইনটেক), মাহমুদ (২৭ ইনটেক) এবং আমি জিল্লুর (১৬ ইনটেক)। ভ্রমণসঙ্গী সকলেই ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। ১৮ তারিখ সকাল ৬ টা ২৫ মিনিটে আমি কল্যানপুর বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি আমার আগেই মাহমুদ, নাফিজ ভাই এবং হাকিম ভাই এসে হাজির। তিন দিনের ভাড়া করা মাইক্রোবাসের ড্রাইভার মাহফুজ সাহেব আমাদের নিয়ে ছুটে চললেন। পথে তিতুমীরকে নিয়ে আমরা মালিবাগে চলে এলাম সময়ের আগেই। সেখান থেকে ইমদাদ ভাই, নিয়াজ ভাই এবং রানা ভাই মাইক্রোবাসে চাপতেই আমরা সকাল সাড়ে সাতটার দিকে রওনা হলাম বরিশাল মুখে। ছুটির দিন থাকায় পথ ছিল জ্যাম মুক্ত। মাহফুজ সাহেব দক্ষ এবং বিবেচক চালক। স্পীডিং না করেই সে সবসময় গাড়ি চালিয়েছেন, আর আমরা ছিলাম নির্ভার, আড্ডায় মত্ত। পদ্মা ব্রিজ পার হতেই সবার ক্ষুধার তাড়নায় পড়ে ভাঙ্গা পাড় হয়ে বেশখানিকটা সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লাম একটি দোকানে। আসলে একটি নয়, দুটি দোকান। আমরা ভাগ হয়ে গিয়ে দুটি দোকানে বসে পরলাম প্রাতরাশের জন্য। যুতসই মানের নয় বটে, তবে কি এ ধরনের টুরে একটু আধটু দেশগ্রামের সাধারণ দোকানে খাওয়া দাওয়া করার অভ্যাস করা ভালো। কম তেলের পরোটা, ভাজি-ডাল, ডিম, মিষ্টি। সবার ক্ষুধার বেগ ছিল বেশ। গোগ্রাসে খেতে দেখলাম সবাইকে। খাওয়া শেষে চা হাতে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে দেখলাম সবাইকে। অল্পক্ষণে আবার গড়িয়ে চললো গাড়ির চাকা, আর আমরা আমাদের কলেজের নানা স্মৃতিতে মত্ত। সোয়া এগারোটার দিকে আমরা বরিশালে পৌঁছে যাই। সামান্য সময়ে ফ্রেস হয়ে নেই। ডাবের পানি দিয়ে আমাদের আপ্যায়ন করেন এবডেকের সদস্যরা (ABDEC, বরিশাল বিভাগের ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠন)। এরপর আমরা চললাম শেলি (৪র্থ ইনটেক) ভাইয়ের স্কুল পরিদর্শনে। জাহানারা ইসরাইল স্কুল ও কলেজ পরিদর্শন ছিল আমাদের কাছে কেবলই বিস্ময়।কলেজ রোডে অবস্থিত স্কুলে এসে দেখি শেলি ভাই আমাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য নীচে নেমে এসেছেন। শেলি ভাইকে এর আগে দেখিনি আমি। পরিচিত হলাম তার সাথে। তিনি আমাদের নিয়ে আসলেন অডিটরিয়ামে। আমরা স্টেজে বসলাম, লম্বাকৃতির অডিটরিয়াম কানায় কানায় ছাত্রছাত্রী তে পূর্ণ। আমরা বসতেই ডেইসে উঠে এলো দুজন বালিকা। মাইক্রোফোনের কাছে গিয়ে একেবারে শুদ্ধ আমেরিকান একসেন্টে ইংরেজিতে আমাদের স্বাগত জানালো। একটু বলে রাখি, বরিশাল অঞ্চলের কথায় একটি আঞ্চলিক টান আছে। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এর বাইরে কিছু আশা অন্তত আমি করিনি। সেখানে এরকম বিশুদ্ধ ইংরেজি শুনে আমার মত সবাই বিস্মিত। এরপর শেলি ভাই তার স্কুল সম্পর্কে বললেন এবং আমরা সবাই ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখলাম। তারপর শুরু হলো প্রশ্নোত্তর পর্ব। ছাত্রছাত্রীরা আমাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলো আর আমরা তার উত্তর দিচ্ছিলাম। একসময় আমরা গলদঘর্ম হয়ে উঠলাম। ওদের প্রশ্নের গভীরতা, বিষয়বস্তু শুনে আমরা শুধু বিস্মিত-ই নই, খুবই আনন্দিত-ও বটে। বলে রাখি সামনের সারি থেকে পেছনের সারির সবাই এ আলোচনা এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করে। ওদের চলন বলন, বাচনভঙ্গি সত্যিই অবাক করার মত। সম্পুর্ন পর্বটি ছিল ইংরেজিতে। ওদের প্রশ্ন আর যেন শেষ হয় না। সাধারণত এজাতীয় প্রোগ্রামগুলো ছাত্রছাত্রীদের কাছে হয় খুবই দায়ছাড়া ধরনের। কিন্তু এক্ষেত্রে একেবারেই ভিন্নতর মনে হলো। খুবই সাবলীলভাবে ওরা উপভোগ করছিল। অবশেষে প্রায় আড়াইঘন্টা পর শেলিভাইয়ের হস্তক্ষেপে প্রশ্নত্তর পর্বের সমাপ্তি ঘটে। শেলি ভাই আমাদের জন্য লাঞ্চের আয়োজন করেছিলেন কাছের একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে। খেতে খেতে তার কাছে জানতে পারলাম স্কুল এবং ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্কে আরো অনেক কিছু। তার স্বপ্ন এখন শুধুই স্কুল ঘিরে। স্কুল বিস্ময়ের ঘোর নিয়েই আমরা চলে এলাম সার্কিট হাউসে। সেখানে আমাদের জন্য চারটি ডাবল বেডেড রূম নির্ধারিত ছিল। আমরা ছিলাম ক্লান্ত। রূম ডিস্ট্রিবিউশনে আমি এবং ইমদাদ ভাই একই রূমে থাকলাম। একটু বলে রাখি, পরিকল্পনায় সামান্য পরিবর্তন এসেছে। আমরা প্রথম দিন আর সাতলার বিলে যাবো না। কারন, কেবল সকালেই এই ফুল প্রস্ফুটিত থাকে। গোসল সেরে সামান্য বিশ্রাম নিয়ে দেওয়ারি স্যারের বাসায় যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বিকেলে ঝুম বৃষ্টি, সাথে ঝোড়ো হাওয়া। অগত্যা আকাশ পরিষ্কার হওয়ার কিছু সময় অপেক্ষা করে আমরা প্রথমে মুশতাক (১৪ ইনটেক) ভাইয়ের বাসায় গেলাম। সেখনে তার মা এবং বোনের সাথে কাটালাম বেশ কিছু সময়। খালার বয়স হয়ে গিয়েছে, আমাদের দেখে তিনি ছিলেন খুবই আনন্দিত। মুশতাক ভাইয়ের বোন ডা: আফরোজা আমাদের সাথে এক ভদ্রলোককে দিয়ে দিলেন, যিনি দেওয়ারি স্যারের বাসা চিনেন। খুব সুবিধা হলো আমাদের। সন্ধ্যার কিছু পর আমরা হাজির হলাম স্যারের বাসায়। তাঁর বয়স হয়েছে সাতাশি। তিনি বাসায় একা থাকেন। স্যারের চলাফেরা কম। তিনি নিজেই গেটের তালা খুলে দিলেন। ইলেকট্রিসিটি না থাকায় তাঁর কিছু অসুবিধে হচ্ছিল। আমাদেরকে ড্রইং রূমে বসিয়ে স্যার নিজের রুমে গিয়ে একেবারে আয়রন করা পাজামা পাঞ্জাবি পড়ে এসে বসলেন ড্রইং রুমে। এ যেন ছাত্র এবং শিক্ষকের মিলন অনেক যুগ পর। আমাদের ছিল অনেক প্রশ্ন। স্যার গুছিয়ে সুন্দর ভাবে সেগুলোর উত্তর দিয়ে যাচ্ছিলেন। স্মৃতি রোমন্থন করলেন আমাদের কলেজের অনেক কিছু নিয়ে। তিনি একাধিক ক্যাডেট কলেজে শিক্ষকতা করেছন। ইমদাদ ভাই তাকে নানাভাবে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজকে অন্য ক্যাডেট কলেজের সাথে তুলনায় আনতে চাচ্ছিলেন। তবে স্যারের উত্তর ছিল অনেকটা এরকম যে সকল ছাত্রই শিক্ষকের কাছে সমান। তবে তার কর্মস্থলের মাঝে তিনি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজকেই সর্বাগ্রে রাখেন। খুব সুন্দর সময় কাটলো আমাদের। তিতুমীর ওর লেখা কিছু বই উপহার দিলেন স্যারকে। স্যার আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেছিলেন এবং দ্রুত সামলেও নিলেন। লক্ষ্য করলাম, স্যারের শরীর বরাবরের মত ক্ষীণকায়, তবে অনেকটা দুর্বল। কিন্তু মাথা একেবারে পরিষ্কার। চিন্তা করুন, একটি ৭ম শ্রেনীর ছাত্র বাবা, মা, পরিবার, সবাইকে রেখে ক্যাডেট কলেজে যায়। এই টিচাররাই তাদেরকে পড়াশোনার পাশাপাশি আদব কায়দা, চলাফেরা এবং কিভাবে সমাজের সাথে চলতে হবে, সমাজকে এগিয়ে নিতে হবে এর সবকিছু শেখান। তারা আমাদের কাছে পিতৃ তুল্য। একসময় স্যারকে বিদায় বললাম। খুব খারাপ লাগছিল প্রায় নির্জনে তাকে রেখে চলে আসতে। মনে মনে স্যারের সুস্থতা কামনা করলাম বিধাতার কাছে। এজীবনে আর কখনো তার সাথে দেখা হবে কিনা জানিনা। দ্রুতই সার্কিট হাউজের ফিরতি পথ ধরলাম। রাতে ডিনার সেরে শুয়ে পরলাম। পরের দিনের নানা কর্মকান্ড নিয়ে মাথায় চিন্তা ছিল। তবে কখন জানি সব ভুলে শুধুই দেওয়ারি স্যারের মুখখানি ভেসে আসছিল মানস পটে। স্যারের স্মৃতি নিয়েই কখন ঘুমিয়ে পরেছি তা আর স্মরণে রইলো না। |
Obaidullah Khan Wahedi,
5/
269
|
শৈশব গীতিশৈশব গীতি মোহাম্ম্দ ওবায়েদুল্লাহ্ খান ওয়াহেদী। একা বসে কত কথা ভাবি যেন তোর খু্ব কাছে বসে আছি কলেজের ছাদে কিবা বারান্দায় চুপচাপ অভিমানে, কতদিন গেলো বছর পেরোলো কত সৃর্য ডুবে চাদ উঠে রাতে রঙ মেখে অবশেষে ধুসর আকাশ। ঘুম ভেঙে প্রতিটি সকাল দিন হয়ে বয়ে গেছে প্রতিদিন দৌড় ঝাপ খেলাধুলা লেখাপড়া খাওয়া দাওয়া, রাত দুপুর পাশাপাশি বিছানায় মায়ের মমতা ভুলে বেদনায় স্বপ্ন একে কল্পনা সুনীল। পিটি প্যারেড ফুটবল মাঠ শীতের সকাল জড়সড় দৌড় ঘন্টা বাশির যন্ত্রনায় ভোর স্থির বসে নিজের ক্লাসে পড়াশোনা, হেটে যেত বহুদুর অসীম সসীম দল ধরে হলে সিনেমা দেখা রাজ্জাক কবরী প্রেমে। শিকল ভাঙার গান বুকে বিপ্লবী হাত উঠেছে উপরে একাত্তুরে ক্ষুদ্ধ স্বদেশ বিক্ষত মন বিভাজন বন্দী পাখিরা কতটা কষ্টে ছিল, ভুলে থাকা বন্ধুরে সেই শৈশব খন বিকেলের নাস্তা কিবা খেলার সময় ঝাক বেধে চলা পোনার মতন। নীড় ছেড়ে বেড়ে উঠা পাখির ছানা দুর বহুদুর উড়ে পাখায় ভর করে কেহ বা কাহারে কোন খানে কোথায় দিন রাত ছুটে খেটে কোন বাটে, জানি নাই হয়তো কিছুই তবুও উড়েছি কত না অজানায় মেলেনি সেই দিন আর শৈশব বেলায়। ঢাকা। ০৬/০৩/২০১৮। |
Obaidullah Khan Wahedi,
5/
269
|
ক্যাডেট জীবনযেখানে শৈশব হারায় বেদনায় সে ও কি জীবন ভ্ৰম হয়? সেই যে বাছা যা’র কোলছাড়া বুক ফাটা বেদনায়। হল কি ফেরা এত লেখাপড়া সেই কোলে কোনদিন ? আজো কাঁদে মন বড় অনাদরে যাকে খুঁজে সারাক্ষন। নদী ঘাট পুকুর রয়ে গেল দুর বন্দী হল যে ভুবন, নেই সে খেলার সাথী ভাইবোন হারিয়ে গেল আপন৷ কি যে অসহায় ভিজে কান্নায় রাত্রিতে মাথার বালিশ, বুক ভেঙে যেত গভীর ব্যাথায় করিনি কখন নালিশ। আজো সেই ব্যাথা হুহু কাতরায় বিজনে বিষন্ন মন, সেই যে সাথীদের খুঁজে ফিরি যত ফিরে কি হৃতধন? নতুন দিন শুরু পরিপাটি ছিমছাম বাধা ধরা শত নিয়ম, ভোরে ওঠা দৌড়পারা লাফ ঝাপ বুকডন ব্যায়াম। ঘড়ি ধরে খাও দাও রাত্রিতে ঘুম যাও ঘন্টা বাজে দশটা হলে, রুটিন খাবার খাও রুটি পরাটী পোলাও সবই হত ঘন্টার তালে। ঘুমে চোখ কচলাও তাড়াতাড়ি বদলাও জামা জুতা বারবার, বাশীর চিৎকার দৌড়াদৌড়ি হুংকার সারি ধরে খাড়াবার। চুন থেকে খসলে পান বড় ভাই ধমকান মিলিটারি অশ্লীল খিস্তি, বুকডন ব্যাঙ ঝাপ কান ধরে যার লাফ কত ছিল অভিনব শাস্তি । বাম ডান কদম ফেলা সুকঠিন শৃংখলা সৈনিক জীবন রেশ, খাকি জামা পায়ে বুট ল্যানিয়ার্ড এ্যাপুলেট লাগত দারুন বেশ । টাই প্যান্ট সাহেবানা কাটাচামচ খানাপিনা সিনেমায় সপ্তাহ শেষ, সকলে মিলে খেলাধুলা দলবেধে পথচলা মুছে দিত কষ্ট ক্লেশ । টপকে চার দেয়াল ব্যাঘ্র মাসি টা বেড়াল লড়াকু সামনে দিন, মেডিকেল ভার্সিটি খোজাখুজি ছোটাছুটি বাজে ঘন্টা সুরে বীণ। খাঁচার পাখিটা দেখবে জীবনের বাকিটা ডানা মেলে আকাশে চিল, ঘরে ফিরে দেখে ফের গেছে বেকে বহু দুর নেই কোন পথের মিল ৷ আবার অসহায় ছিল যে খাঁচায় কেমনে উড়ি মেঘেদের সীমানায়, অকুল দরিয়া ভারি দিতে হবে পাড়ি হাতে দাঁড় হারতে তো শেখানাই ঝড় তুফান আসে কেহ ডুবে কেহ ভাসে জলে ভিন্ন হল শ্রোতধারা, আলিঙ্গন অভিনন্দন মেডেলে মাঠের ফুটবলে বিজয়ী হয়েছে যারা । আর যত কুলহারা ভেসে গেছে হঠাৎ নদীর বানে কোথায় কে বা জানে, তাদের ঠিকানা কোথা খালি পড়ে স্মরণিকা পাতা নামটাও আসেনা মনে। কেউ কেউ শায়িত মাটির তলায় ফিরে একবার সেই থেকে দেখা নাই, মাতৃক্রোর হীন মরীচিকা মলিন উদাসী বিহবল ত্রিযামি জীবন দোলায় ৷৷ মোহাম্মদ ওবায়েদুল্লাহ খান ওয়াহেদী (৫/খ/২৬৯) |
Golam Kabir,
6/
321
|
দাদীর গল্পদাদীর গল্প বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া নামক গ্রামে আমার দাদার জন্ম| আমার দাদীর বাড়ি থেকে দাদার বাড়ির দূরত্ব আধা মাইলের কাছাকাছি| আমার দাদী ছিলেন অপূর্ব সুন্দরী| দুধে আলতা গায়ের রং, নিটোল চেহারা এবং একহারা লম্বা গড়ন| তখনকার দিনে অন্য বাড়ির মেয়েদের দেখা মেলা ছিল খুব দুস্কর| দাদীর মুখে শোনা যে দাদা নাকি তার রূপের কথা লোক মুখে শুনে তাকে দেখার জন্য তাদের বাড়ির পাশের নারিকেল গাছে উঠে অপেক্ষা করতেন| এভাবে একদিন তার দেখা মেলে| তার রূপ দেখে দাদা নারিকেল গাছ থেকে পড়ে যান| ভাগ্যিস দাদা পড়েছিলেন পাশের পুকুরেI তা না হলে হয়তো আমার এ পৃথিবী আর দেখা হতো না| পরবর্তীতে দাদা সেই রূপসীকে বিয়ে করে আধামাইল দূরে তার নিজের বাড়িতে উঠান| তাদের সংসারের প্রথম সন্তান আমার বাবা| পরে তাদের সংসারে একে একে আরো পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলের জন্ম হয়| আমার দাদার শখ হয় যে তার বড় সন্তানকে সে মস্ত বড় উকিল বানাবেন| সেই শখ পূরণের উদ্দেশ্যে সে আমার বাবাকে লেখাপড়া করাতে শুরু করেন| আমার বাবা তার স্বপ্ন পূরণ করেছেন| আমার বাবা বরিশাল শহরে ওকালতি শুরু করেন পাকিস্তান আমলের শুরুর দিকেI তার পূর্বেই আমার দাদা মারা যানI আমার দাদি ও ফুফুরা সহ বরিশালের বাসায় বাস করা শুরু করেন বাবাI আমার জন্ম পঞ্চাশের দশকের শেষার্ধেI আমি একটু বড় হওয়ার পরে আমার দাদি আমার প্রেমে পড়ে যায়I আমি নাকি দাদার মতো দেখতে, তাই সে আমাকে খুব স্নেহ করতেনI আমি প্রাথমিকভাবে বরিশাল জিলা স্কুলে লেখাপড়া শুরু করিI পরবর্তীতে, ১৯৬৯ সনে আমি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হইI তখন আমার দাদি বাধা হয়ে দাঁড়ায়I সে আমাকে তার কাছ থেকে দূরে দিতে চায়নিI আমার বাবা অনেক কষ্টে তাকে বুঝিয়ে আমাকে ক্যাডেট কলেজে রেখে আসেনI এটা ১৯৭২ সনের ঘটনাI আমি তখন ক্যাডেট কলজে দশম শ্রেণীতে পড়িI আমার দাদির অনুরোধে আমার বাবা ওনাকে নিয়ে একটা গাড়ি ভাড়া করে পারিবারিক মিলনের দিনে বরিশাল থেকে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে আসেন আমাকে দেখতে ভোর চারটায় রওয়ানা দিয়ে ওনারা দুপুর একটা নাগাদ পৌঁছাতে সক্ষম হনI ক্যাডেট কলেজের নিয়ম অনুযায়ী আমার সাথে সাক্ষাতের পরে বিকাল চারটায় বিদায়ের পালাI মাঝে অভিবাকদের কলা, চানাচুর এবং চা পরিবেশন করা হয়I আমি দাদিকে বললাম তোমাকে এখন যেতে হবেI সে আমাকে বললো : এ কয় কি? মুই আইছি তোরে দেখতে, মোই তোর সাথে রাতে থাকমু, তোরে হাত দিয়া ভাত খাওয়ামু, তার পরে কাল ভোরে যামু. আমি বললাম দাদি তা সম্ভব নাI তোমাকে এখন যেতে হবেI আমার বাবা তখন আমাদের শিক্ষক জনাব মোর্শেদের সাথে ওনার জমির মামলার বিষয়ে আলাপ করছিলেনI আমার দাদি তখন আমাকে প্রশ্ন করেন যে তোদের এখানে বড় বেডা কেডা? আমি তখনকার অধ্যক্ষ জনাব করিমউদ্দিন সাহেবকে দেখিয়ে দিলামI ইতিমধ্যে আমাদের রুমে ফেরার সময় হয়ে গেলোI আমি দাদিকে হল রুমে রেখে চলে গেলামI আমার দাদি করিম স্যারের কাছে গিয়ে বললেন: পোলা: মুই আমার নাতি দেখতে বরিশাল থেকে সেই বেন্ন্যাকালে রওয়ানা দিয়ে আইছিI আপনারা একটা কলা আর একটু চানাচুর খাওয়াচেনI মোগো বাড়িতে গেলে মোর মুরার সালুন দিয়ে ভাত দিতামI আমার এতে কোনো দুঃখ নাইI কিন্তু মুই আইছি মোর নাতি দেখতে, মুই নাতির সঙ্গে রাতে থাকমু, নিজে হাত দিয়ে ভাত খাওয়ামু. তারপর কাল ভোরে যামুI অধ্যক্ষ মহোদয় বললেন-না সেটা ক্যাডেট কলেজে হয়নাI ততক্ষনে আমার আব্বা চলে এসেছেI আব্বা দাদিকে বুঝানোর চেষ্টা করলেন চলে যাওয়ার জন্যI দাদি বললেন যে তুই তো আসার আগে আমাকে বলস নাই যে কবিরকে দেখেই আমাকে চলে আসতে হবেI তাহলে আমি আসতাম নাI এখন আমি কবিরের সাথে না থেকে এবং ভাত না খাওয়াইয়া যাবো নাI জনাব করিমুদ্দিন তখন আমার কাছে আসেনI আমি বললাম: জনাব আপনি বাসায় চলে যানI আমার বাবা ওনাকে নিয়ে যাবেনI উনি আবার আমার দাদির কাছে গিয়ে বুঝাতে চেষ্টা করেন যে উনাকে যেতে হবেI কিন্তু দাদি তার দাবিতে অনড় ছিলেনI তখন দেশে ক্যাডেট কলেজের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছিল। জনাব করিমুদ্দিন তখন ক্যাডেট কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতির সাথে ফোনে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেনI তাকে জানানো হয় আমার দাদির দাবিI আরো জানানো হয় যে তাকে বের করতে হলে পুলিশের সাহায্য লাগবেI তাতে সাংবাদিকরা বিষয়টা জেনে গেলে পত্রিকায় আসবে যে ক্যাডেট কলেজে থেকে একজন বৃদ্ধাকে তার নাতিকে ভাত খাওয়ানোর দাবি জানানোর জন্য জোর করে বের করে দেওয়া হয়েছেI তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেটা ক্যাডেট কলেজের জন্য ভালো হতো নাI পরিস্থিতি বিবেচনা করে সভাপতি সাহেব দাদিকে ক্যাডেট কলেজে থাকার অনুমতি দেনI আমার বাবা চলে গেলেন ঝিনাইদহ হোটেলে থাকার জন্যI দাদিকে আমাদের বদর হাউসে নিয়ে আসা হলোI ওনাকে হাউসে টিউটরের রুমে থাকার ব্যাবস্থা করা হলো. আমি উনার সাথে রাতে থাকলামI রাতের খাবার আসলো ডাইনিং হল থেকেI উনি আমাকে নিজ হাতে ভাত খাওয়ালেনI পরেরদিন সকালে আব্বা এসে ওনাকে নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্য রওয়ানা দিলেনI আমার জানামতে আমার দাদি একমাত্র অভিবাবক যে নাকি ক্যাডেট কলেজের হোস্টেলে ছিলেনI তার দৃঢ়তার কাছে কঠোর সভাপতিকেও হার মানতে হয়েছিলI উনি ১৯৯২ সালে ইন্তিকাল করেছেনI মহান আল্লাহ উনাকে জান্নাতবাসী করুনI গোলাম কবির (৬/ব/৩২১) |
Nishad Rumman Prithul,
42/
2248
|
ক্রিকেট, কাবাব ও হাড্ডিসারিককে বলা হয়েছিল ভালো হয়ে যেতে। কিন্তু ও ভালো হয়নি। যদি হতোই, তবে অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মারতে গিয়ে ইনসাইড এজে বোল্ড আউট হতো না। বিশাল বড় ছয় আর চার মারার পর সারিক যখন আউট হয়েছে তখন অলরেডী ম্যাচ ড্র। দুই বলে এক রান দরকার। হাতে আছে আরো দুই দুইটা উইকেট। জয়টা এখন জাস্ট সময়ের ব্যাপার মাত্র। তাই তো? কিন্তু এখানে একটা টুইস্ট আছে। এই গল্পের টুইস্ট হলো - এই টিমের নাম জেক্সকা। এখানে যারা খেলে তারা বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের অন্ধ ফ্যান। তাই এরাও কখনো সহজ ম্যাচ সহজে জিততে পারে না। হয় সহজ ম্যাচকে কঠিন করে তারপর জিতবে। অথবা কঠিন ম্যাচকে সহজ করে তারপর হারবে। এটাই সাইন্স এখানে। আমিও এই টিমের একজন (অ)গুরুত্বপূর্ণ মেম্বার। নয় ক্যাডেট কলেজের এক্স ক্যাডেটদের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের গল্প বলছিলাম। গ্রুপ পর্বের খেলায় জেক্সকার প্রতিপক্ষ ছিলো পাবনা আর বরিশাল। শুরুতেই যেই ম্যাচের ধারাভাষ্য দিচ্ছিলাম সেটা ছিলো দ্বিতীয় ম্যাচ, বরিশালের সাথে। আর প্রথম ম্যাচ আমরা খেলেছি পাবনার বিপক্ষে। সেই ম্যাচে আমরা বিরাট ব্যবধানে জিতেছি। মোট চার রানে। হাসবেন না। চার রানের ওই বিশাল জয় মোটেই হেলাফেলা করার মত না। ঐ ঘটনাও বলছি। পাবনার বিপক্ষে জেক্সকা প্রথমে ব্যাট করে ২১১ রান বোর্ডে যোগ করে। খুবই হ্যান্ডসাম স্কোর। জয়ের জন্য পাবনার প্রয়োজন ২০ ওভারে ২১২। খুব একটা সহজ টার্গেট না। আবার একদম অসম্ভবও না। যে কোনো কিছুই হতে পারে। তবে, ১৬ ওভার পর ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে যায় পাবনা। ১৬ ওভার শেষে স্কোরকার্ডে পাবনার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৩৬। জয়ের জন্য প্রয়োজন ৪ ওভারে ৭৬। অর্থাৎ, ওভার প্রতি ১৯ রান। জেক্সকা টিমের বিশ্বাস ছিলো স্বয়ং আইসিসির টিমও এই অবস্থা থেকে ম্যাচ জিততে পারবে না। জয়ের খুবই কাছাকাছিও চলে এলাম আমরা। ড্রিংকস ব্রেকে আলোচনা করলাম জেতার পর আমরা সেলিমের কাবাব খেতে যাবো নাকি কচুখেতের জুস। সাকিব বললো ও দুইটাই খেতে চায়। কিন্তু ক্যাপ্টেন মনে করিয়ে দিলেন এখনো চার ওভার বাকি ম্যাচ শেষ হতে। আমরা ক্যাপ্টেনকে বললাম, ভাই আপনি এতো টেনশন করেন কেনো? টিম অস্ট্রেলিয়াও এখন থেকে ম্যাচ জিততে পারবে না। ৪ ওভারে ৭৬ - মুখের কথা নাকি! তাও আবার হাতে আছে মাত্র ৪ উইকেট! ক্যাপ্টেন মনে করিয়ে দিলেন - ক্রিকেটে যে কোনো কিছুই সম্ভব। তারপর কি হলো জানেন? লাস্ট চার ওভারে আমাদের উপর বাংলাদেশ ভর করলো। ১৭ তম ওভারে পাবনা ২৪ রান তুলে নিলো। জয়ের জন্য ওদের প্রয়োজন ১৮ বলে ৫২! ১৮ নাম্বার ওভারে পাবনা আরো ১৫ রান যোগ করলো। এখন দরকার ১২ বলে ৩৭। ১৯তম ওভার থেকে আসলো আরো ১২ রান। জয়ের জন্য শেষ ওভারে পাবনার দরকার ২৫ রান। প্রথম পাঁচ বলে হলো ২০ রান। এক বলে দরকার ৫ রান। পাবনার বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান লাস্ট বলে ছক্কা হাকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে আউট হয়ে ফিরে গেলে আমরা ৪ রানে জিতে গেলাম। প্রায় হেরেই গেছিলাম। তবে শেষ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়ে আমরা চার রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জিতে সেলিমের কাবাব খেতে চলে গেলাম। এক টুকরা লুচি মুখে দেই আর ক্যাপ্টেন চিল্লায়ে উঠেন - খা খা , তোরা লুচিই খা। কাবাব খাবি না কেউ খবরদার। 'শশার সসের ' মধ্যে মাত্র কাবাবটা ভিজিয়ে মুখে দেবো তখন ক্যাপটেন আবার চিৎকার করে উঠলেন - কাবাব খেতে তোদের লজ্জা লাগে না? এতো সহজ ম্যাচ এমন কঠিন করে জেতার পর তোরা কাবাব খাস কিভাবে? তোদেরকেই তো কাবাব বানিয়ে খেয়ে ফেলতে মন চাচ্ছে। সাকিব মনে হয় ক্যাপ্টেনের কথা শোনেনি। ও বলে উঠলো - ভাই দেখেন, কাবাবের মধ্যে একটা চিকন হাড্ডি পাওয়া গেছে। ক্যাপ্টেনের কথা হজম করে আমরা সাকিবের চিকন হাড্ডি দেখায় মনোনিবেশ করলাম। হাসান ভাই পেশায় ডাক্তার। উনি বললেন এটা রিবসের হাড়। চাবায়ে খেয়ে ফেল। অনেক মজা। ক্যাপ্টেন রকি ভাই আবার শাউট করে উঠলেন - তোরা হাড্ডিই খা, কাবাব খাবি না খবরদার। চিল্লাপাল্লা শুনে ওয়েটার এসে জিজ্ঞেস করলো, স্যার কোনো সমস্যা? রকি ভাই বললেন, এদেরকে এক প্লেট হাড্ডি দিয়ে যান। এরা হাড্ডি খাবে। কাবাব খাওয়ার যোগ্যতা হয় নাই এখনো। আমরা কাবাব আর হাড্ডি খেয়ে যার যার বাসায় ফিরলাম। ম্যাচের এক্সাইটমেন্ট তখনো জীবন্ত। কাপ্তান রকি ভাই গ্রুপে লিখলেন, নেক্সট ম্যাচ বরিশালের সাথে যদি এরকম নাটকীয় খেলা খেলিস তাহলে আর মাঠ থেকে বাসায় যেতে দেবো না। ডাইরেক্ট সিনেমার শুটিংয়ে পাঠায় দিবো। সেই ম্যাচ। যেটা অলরেডী ড্র হয়ে গেছে। যেখানে দুই বলে মাত্র এক রান দরকার। আমরা সেই একটা রান নিতে পারলাম না। পরপর দুই উইকেট পড়ে গেলো। ম্যাচ সুপার ওভারে গড়ালো। অবশ্য সুপার ওভারে ম্যাচ জিতে আমরা আবার সেলিমের কাবাব খেতে গিয়েছিলাম। ক্যাপ্টেনের মুখ থমথমে। উনি আজকে চিৎকার করছেন না খুব একটা। তবে একটু পরপর আমাদের দিকে তাকাচ্ছেন। আমরা ওনার চোখের দিকে তাকাতে পারছি না। মনে হচ্ছিল, ওনার চোখ এক একটা স্নাইপার। সেখান থেকে গুলি বের হচ্ছে, কিন্তু শব্দ হচ্ছে না। আজকে আর কাবাবের মধ্যে হাড্ডি পাওয়া গেলো না। আমরা শুধু কাবাব খেয়ে বাসায় ফিরলাম। নেক্সট ম্যাচ সেমিফাইনাল, রাজশাহীর বিপক্ষে। প্রথম হাফের খেলা শেষ। রাজশাহীর সংগ্রহ ২০ ওভারে ১২৩। আমাদের টার্গেট ১২৪। আমাদের সামনে এটা একেবারেই মামুলি টার্গেট। জাবির বললো, তাই বলে ওরা দেড়শোও করতে পারলো না। লোল। তেরো ওভার শেষে আমাদের রান হয়েছে ৭৩। উইকেট পড়েছে মাত্র ২ টা। অর্থাৎ, ৪২ বলে আমাদের প্রয়োজন মাত্র ৫১ রান। হাতে আছে আটখানা উইকেট। ম্যাচ জেতা আমাদের জন্য জাস্ট সময়ের ব্যাপার মাত্র। আবির বললো, এই ম্যাচ তো জিতেই গেছি, এটা নিয়ে এতো ভেবে লাভ নেই। চলেন আমরা ফাইনালের প্ল্যানিং করি। আমরা ফাইনাল ম্যাচের প্ল্যানিং করায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। মাঠে আমাদের টিম ব্যাটিং করছে, আর আমরা কয়েকজন মাঠের বাইরে ফাইনালের প্ল্যানিং করছি। টুকটুক করে খেলা এগিয়ে যাচ্ছে। রান হচ্ছে, দুই একটা উইকেট পড়ছে, কিন্তু আমরাই এগিয়ে। বোরিং ম্যাচ। যাই একটু কোল্ড কফি খেয়ে আসি। কোল্ড কফি খেয়ে মাঠে এসে দেখলাম আমাদের ড্রেসিং রুমে পিন পতন নীরবতা। আর রাজশাহীর গ্যালারি থেকে ভেসে আসছে আনন্দধ্বনি। স্কোরবোর্ডে তাকিয়ে দেখলাম ১৯ ওভার শেষে আমাদের রান মাত্র ১০৭। উইকেট পড়ে গেছে ৬ টা। জয়ের জন্য শেষ ওভারে দরকার ১৭ রান! ৬ বল, ১৭ রান। ম্যাচ ক্লিয়ারলি রাজশাহীর পক্ষে। আমরা আগের ম্যাচে ২ বলে মাত্র ১ রানই নিতে পারিনি। সেখানে ৬ বলে ১৭ রান করবো কিভাবে! এতো কাছে এসেও হেরে যাবো! খুবই কষ্ট লাগছিল। নিজেকে দোষ দিচ্ছিলাম। যেনো কোল্ড কফি খেতে না গেলে এরকম দুর্ঘটনা ঘটতো না! শেষ ওভারের প্রথম বলেই শাওন ভাই একটা ছক্কা মারলেন। তৃতীয় বলে হাসনাত ভাই আরেকটা ছয় মারলেন। প্রথম তিন বলেই এলো ১৩ রান। শেষ তিন বলে দরকার ৪ রান। শেষ বলের রিস্কে আর যেতে চাননি শাওন ভাই। পঞ্চম বলেই বিশাল এক ছয় মেরে ব্যাট উচু করে মাঠ ছাড়লেন। আমরা জিতে গেলাম। আমাদের সামনে এখন শুধুই ফাইনাল। সোনালী রঙের পরম আরাধ্য ট্রফিটা জ্বলজ্বল করছে। একটাই বাঁধা। আমাদের অপনেন্ট, রংপুর। রংপুরের বিপক্ষে জিতলেই এই সোনালী ট্রফিটা আমাদের হয়ে যাবে। আমাদের লেভেলের ক্রিকেট এটাই আমাদের সর্বোচ্চ অর্জন। বিশ বিশ করে মোট চল্লিশটা ওভার। সাড়ে তিন ঘণ্টা। তারপরেই নির্ধারণ হবে ট্রফিটা কাদের ঘরে যাবে! না, এবার আর কোনো নাটক সিনেমা হয়নি। শেষ বল কিংবা ওভারের কোনো সমীকরণ আসেনি। রংপুরকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়ে আমরা ফাইনাল জিতে নিলাম। আমাদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৭৭ রানের টার্গেটে রংপুর করতে পেরেছে মাত্র ১২৪ রান। ৫২ রানে আমরা ফাইনাল ম্যাচ জিতে গেলাম। আমরা আবার সেলিমের কাবাব খেতে চলে এলাম। সাকিব বলে উঠলো, আজকেও কাবাবের মধ্যে একটা হাড্ডি পাইসি। রকি ভাই চিৎকার করে ওয়েটারকে ডাকলেন। কোনো সমস্যা স্যার? কাবাবের মধ্যে হাড্ডি কি কম পড়েছে? রকি ভাই একগাল হেসে বললেন, না, ওর প্লেটটা চেঞ্জ করে এক প্লেট অনলি কাবাব দিয়ে যাও। কোনো হাড্ডি যেনো না থাকে। আজকে কাবাবের মধ্যে হাড্ডির কোনো জায়গা নেই! |
Abul Hasan Mohammad Bashar,
18/
1003
|
'আসি বলে হাত তুলে কে চায় বিদায়'!(প্রয়াত শিক্ষক কবি রফিক নওশাদ স্মরণে) আবুল হাসান মুহম্মদ বাশার ১৮/১০০৩ একটা সময় গেছে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের প্রায় সবাই 'অন্ধ আয়োজন'- শব্দযুগলের সঙ্গে পরিচিত ছিলো। কলেজের বাংলার শিক্ষক রফিক নওশাদ স্যারের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নামটি সেসময় কাব্যমনষ্ক ক্যাডেটদের মুখে মুখে ফিরতো। স্যার মিঠেকড়া মেলানো মানুষ ছিলেন, কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে অনেকের কাছে স্যারের কবি সত্ত্বাটাই বড় হয়ে উঠেছিলো। স্যার প্রয়াত হয়েছেন আগস্ট ১০, ২০১৬। স্যারের মৃত্যু আমাদের অনেককে গভীরভাবে নাড়া দিয়ে গেছে। সাধারনভাবে সত্তরের কাছাকাছি বয়সের কারো মৃত্যুতে এতটা হবার কথা নয়, সত্তর তো মোটামুটি যাবারই সময়, কিন্তু আমরা যারা স্যারকে জানি, তারা আমাদের অন্তর্জগতের এই আলোড়নের কারণটাও বুঝতে পারি- স্যার আমাদের কাছে অসাধারণ এক উচ্চতায় আসীন ছিলেন। বাংলার শিক্ষক হিসেবে শুধু ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ নয়, পুরো ক্যাডেট কলেজ পরিমন্ডলেই তাঁর আলাদা খ্যাতি ছিলো। ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও কবি। কবি হিসেবে খ্যাতি যতখানি ছিলো, বিশিষ্টতা ছিলো তার চাইতে ঢের বেশি। এদেশে খ্যাতির অনেক নিয়ামক, কবি রফিক নওশাদ সেসবের ধার ধারেননি, নিভৃতেই চালিয়ে গেছেন তাঁর কাব্য সাধনা। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা বেশি নয়, মোটে চারটে, তাঁকে নিয়ে হৈ চৈ ও বেশি হয়নি, উল্লেখ করবার মত কোন পুরষ্কার ও জেতেননি তিনি, তবে কথা যখন কবি ও কবিতাকে নিয়ে, তখন এসব উলঙ্গ পার্থিবতার বাইরেও কথা থাকে, আমি তো বলি কবিতার ক্ষেত্রে এসবের বাইরের কথাটাই আসল; যদি মানি কবিতার কাজ হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া, মর্মমূলে নাড়া দিয়ে যাওয়া- রফিক নওশাদ সফল কবি। কবি রফিক নওশাদের কাব্য চর্চার সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি সম্ভবত ’কালপুরুষ’- স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান কবিতা পত্রিকা। শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, নির্মলেন্দু গুন, আবুল হাসান থেকে শুরু করে সমসাময়িক উল্লেখ্য এমন কোন কবি ছিলেন না যিনি কালপুরুষে লেখেননি। স্যারের কবিতা আজ আমাদের বুক, মুখ হয়ে ফেসবুক, টুইটারে ছড়িয়ে পড়ছে। স্যারের কাব্যগ্রন্থসমূহে নিমজ্জিত আমরা নিজেদের ভেতরে পংক্তি বিনিময় করে চলেছি। যেমন স্যারের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ’অন্ধ আয়োজন’ থেকে বন্ধু মাসুদ সেদিন তুলে আনলো- ’চলে যেতে হবেই যখন জানো, করছো কেন অন্ধ আয়োজন’। ’যাবার আগে’ শিরোনামের এই কবিতার আগের পংক্তিগুলো ফেসবুকে আগেই শেয়ার করেছিলেন ক্যাডেট কলেজের আর এক বড় ভাই মহিউদ্দীন- ’বুকের ভিতর কান্না থাকে নাকি, থাকে নাকি বরফ গলা নদী? দু’ চোখ কেন ঝাপসা হয়ে আসে চিরতরে চলেই যাব যদি?’ সেই ১৯৭৬ সালে লেখা কবিতা। স্যার তখন টগবগে তরুণ। আমরা আমূল বিদ্ধ হলাম। যেন আমাদের জানাই ছিলো না আমাদের এই জীবন- আয়োজনের অর্থহীনতা। মনে হলো হয়তো শুধু কবিদের পক্ষেই এমনটা সম্ভব- প্রবল থাকার ভেতরেও প্রতিদিনকার অস্তগামী সূর্য আর অপসৃয়মান মেঘমালার দিকে তাকিয়ে না থাকার হাহাকার খুঁজে ফেরা। ’যুদ্ধে যাবো পিতা’ থেকে জানলাম কবি ও মুক্তযোদ্ধা রফিক নওশাদকে- ’সকাল-সাঁঝে বুকের মাঝে শঙ্কাহরণ ডঙ্কা বাজে, চিত্তে জ্বলে চিতা! যুদ্ধে যাবো পিতা।’ কবিতা কেবল নান্দনিকতা নয়, সামাজিক দায় মেটানোর হাতিয়ারও বটে। মুক্তিযোদ্ধা কবি রফিক নওশাদ জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তাঁর এই হাতিয়ারকে ব্যবহার করে গেছেন। এই সেদিনও তনু হত্যার প্রতিবাদে জ্বলে উঠেছিলো তাঁর লেখনী। সমাজের নানা অসঙ্গতির চিত্র তুলে ধরে ফেসবুকে ’ভাবিয়া হইনু সারা’ নামে দু’ লাইনের মজার সব ছড়া লিখেছিলেন। এর দু’ একটা তুলে ধরার লোভ সংবরণ করতে পারছি না। কয়েক মাস আগে বনফুলের মিষ্টিতে ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতিতে খবর হলে লিখেছিলেন- ’ভাবিয়া হইনু সারা- লাভের লোভে মরনের বিষ এভাবে ছড়ায় কারা!’ সড়ক মেরামতের কাজে ফাঁকির চিত্র তুলে ধরে লিখলেন- ’ভাবিয়া হইনু সারা- কোন বাহানায় এমন কান্ড ঘটাইতেছে আজ কারা!’ নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ের দূর্বোধ্যতা নিয়ে মুহম্মদ জাফর ইকবালের মন্তব্যের পর স্যার লিখলেন- ’ভাবিয়া হইনু সারা- বুঝিনার বোঝা চাপাইয়া দিয়া কিতাব লিখিল কারা!’ তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে কবি রফিক নওশাদ অনন্য হয়ে ওঠেন যে কারণে, সেটা ঐ নান্দনিকতাই। কেবল একটা উদাহরণ দেবো। ’শেষ পারানির কড়ি’ কাব্যগ্রন্থের উৎসর্গে জীবন সঙ্গিনীকে উদ্দেশ্য করে কবি লিখেছেন (’ইচ্ছা’ শিরোনামে কবিতাটা বইয়ের ভেতরেও আছে)- ’এখন তুমি ব্যস্ত ভীষণ, তাই- ছল করে জল ছিটিয়ে দেব, ইচ্ছা খুঁজে পাই এবং ভাবি- ব্যস্ততাময় কর্মক্ষেত্র থাক্ না পড়ে, ভাসিয়ে তোমার যুগল নেত্র অশ্রু হয়ে ঝরি। ঐ আঁচলে আছে আমার শেষ পারানির কড়ি!’ কী অসম্ভব ’টাচি’! যদি কেবল আমার কথাই বলি- আজকালকার কবিতায় এরকম দু’ একটা পংক্তির জন্য আমার অপেক্ষার শেষ হয় না। আর এরকম অসংখ্য পংক্তিমালা কবি রফিক নওশাদের প্রতিটি কাব্যগ্রন্থে। ওপরের পংক্তিগুলোই বলবে কবিতার ক্ষেত্রে রফিক নওশাদ ছন্দ ও ব্যাকরণের একনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন। সেদিন স্যারের জানাজা শেষে বন্ধুদের সাথে ওপরের এই লাইনগুলো শেয়ার করছিলাম। তিতুমীর বলে উঠলো- ’স্যারের অধিকাংশ কবিতা দুই, তিন বা চার দিয়ে বিভাজ্য’। কথাটার মানে বোঝা শক্ত নয়। সত্যি, ছন্দের প্রতি আপোসহীন পক্ষপাত ছিলো স্যারের। তাই বলে বিষয় ও ভাবের বৈচিত্র বা আধুনিকতার কমতি ছিলো না সেখানে। আজকাল কবিতা নিয়ে কীসব যেন হচ্ছে, আমি বুঝতে পারি না, কেবল তৃষিতের মত হাতড়ে বেড়াই দেশের প্রথম সারির দৈনিকগুলোর সাহিত্যপাতা। পংক্তিগুলো আমার চোখ থেকে ফিরে ফিরে যায়, অন্তরে প্রবেশ করে না। কবিতা যদি ছুঁয়েই যেতে না পারলো, তো তাকে কবিতা বলা যায় কীভাবে! আর ঠিক এখানেই স্যারের কবিতাগুলো আমাকে অনুশোচনায় দগ্ধ করে। ইদানিং স্যারের কবিতা পড়ি আর ভাবি কেন কবিতাগুলোকে আগে এইভাবে পড়িনি, এখন যেমন করছি সেইভাবে পংক্তি ধরে ধরে স্যারকে জানাইনি আমার মুগ্ধতার কথা। নিজে লিখি তাই অনুমান করতে কষ্ট হয় না একজন কবির জন্য কী গভীর আনন্দের হতে পারতো সেটা। শেষের দিকে স্যারের সঙ্গে আমার যোগাযোগ বেড়ে গিয়েছিলো। স্যার আসতেন। আমার পেশাগত জীবনের এই এক মস্ত বড় পাওয়া- আনন্দে না হোক অন্তত বিপদে আপদে সবাই মনে করে। স্যার সরাসরি আমার রোগী ছিলেন না, স্যারের ছোট ভাই আমার রোগী। তবু স্যার পরামর্শ চাইতেন, জানাতেন শারীরিক যন্ত্রণার কথা। মরণব্যাধি ক্যান্সারের কাছে অসহায় প্রিয়জনের মুখের দিকে তাকাতেও কষ্ট হতো আমার, তবু আশার কথা শুনিয়ে যেতাম, যন্ত্রণা লাঘবের জন্য দু’ একটা ওষুধও লিখে দিয়েছি কখনো কখনো। স্যারকে আমার বই দিয়েছিলাম, একদিন দেখি ঝোলার ভেতরে ভরে স্যার আমার জন্য বয়ে এনেছেন তাঁর লেখা প্রায় সব ক’টি বই। বইগুলো শেলফে সাজিয়ে মাঝে মাঝে তাকিয়ে দেখতাম আর ভাবতাম- সম্ভবত আমি ছাড়া আর কাউকে স্যার তাঁর এতগুলো বই এইভাবে দিয়ে যাননি! ঘটনা সত্য নয় জেনেও এক ধরনের গর্ব মেশানো আনন্দে বুক ভরে উঠতো। কিন্তু তখনো জানতাম না আমার জন্য আরো বড় আনন্দের আর গৌরবের উপলক্ষ্য স্যার বইগুলোর ভেতরে লুকিয়ে রেখে গেছেন। জানতাম না আমার আনন্দ অনন্ত অনুশোচনা আর অশ্রুবিন্দুতে হিমায়িত হয়ে উঠবে। স্যার শেষবারের মত চলে যাবার পরেই কেবল আমি আবিষ্কার করি প্রতিটি বইয়ের ভেতরে আলাদা আলাদা করে লেখা প্রিয় ছাত্রের জন্য প্রাণঢালা আশীর্বাণী। আমি আমার বইয়ে স্যারকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিলাম ’শ্রদ্ধাষ্পদেষু’। উদ্দেশ্য রফিক নওশাদ স্যার বলেই হয়তো কাব্য করে কিছু বলবার ঝুঁকি নিইনি; স্যার তাঁর বইয়ে আমার জন্য লিখলেন তাঁর ’অন্ধ আয়োজন’ কাব্য গ্রন্থের ’ভায়োলেন্স’ নামের কবিতা থেকে- ’বাড়ুক বাড়ুক কীর্তি- অতর্কিত প্রত্যক্ষ হাত, মথিত ঐশ্বর্য নিয়ে উঠে এসো আলোর প্রপাত!’ অশ্রুসিক্ত আমি আমার সীমাবদ্ধতা আর অপারগতাটুকু আনন্দের সঙ্গে মেনে নিলাম। ডা আবুল হাসান মুহম্মদ বাশার অধ্যাপক জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল ঢাকা। |
Junaed Kabir,
32/
1774
|
ক্যাডেট নম্বরযে কোন ক্যাডেটের প্রথম পরিচয় তাঁর ক্যাডেট নাম এবং নম্বর। ক্লাস সেভেনে কলেজে পা দিয়েই কলেজ থেকে পাওয়া এই দুটি জিনিসই যে কোন ক্যাডেটের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে ভাবে মিশে যায়। ক্যাডেট নম্বর টা অনেকটা ব্রান্ড এর মত-ওয়েস্টার্ন আমলে গরু বা ঘোড়ার পিছনে লোহা গরম করে যেমন দেয়া হত! কলেজ কর্তৃপক্ষ ক্যাডেটদেরকে নম্বর দিয়ে কত সমস্যার সমাধান করেছে তার ইয়ত্তা নেই। অমুক সিনিয়র ক্লাস সেভেনের পাঁচজনকে ডেকেছেন- কে কে যাবে? কেন, প্রথম পাঁচ ক্যাডেট নম্বর অথবা শেষ পাঁচ??? এমনিভাবে খাকি ড্রেস, কালো জুতা, পিটি সু, বই-খাতা ইত্যাদি নেয়ার সময় অথবা ডাইনিং এ বসা, ডিউটি ক্যাডেটশীপ, এমন কি বোর্ড পরীক্ষার আসন বিন্যাস-সব কিছুই ক্যাডেট নম্বর অনুযায়ী। ক্লাস সেভেনে আমাদের অন্যতম প্রধান কাজ ছিল সব সিনিয়র ভাইয়ের ক্যাডেট নম্বর মুখস্থ করা। কারণ, ধুপিতে তার কাপড় দেয়ার সময় অথবা ধুপি থেকে আসার পর কোন ভাইয়ের কোন কাপড় তা বোঝার জন্য অবশ্যই ক্যাডেট নম্বর জানতে হবে। আরও আছে, কোনও সিনিয়র ভাই হয়ত একাডেমিক ব্লকে দেখা করতে বলেছেন, তিনি কোন ফর্মে- এটা জানতে হলেও তার ক্যাডেট নম্বর অবশ্যই জানতে হবে! কেননা সাধারণত জোড়-বেজোড় করেই ফর্ম ভাগ করা হয়ে থাকে… আসলে, ক্যাডেট নম্বর যে কোন ক্যাডেটের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামকগুলোর একটি। এখনও মনে পড়ে কলেজে থাকতে যার যার ক্যাডেট নম্বরকে ইউনিক পরিচয় দেবার কত প্রয়াস ছিল! -জানিস, আমার ক্যাডেট নম্বর আর অমুকের জন্ম সাল এক? -আমারটায় অমুক যুদ্ধ হয়েছিল -আমারটায় অমুক মারা গিয়েছিল আরও কত বাহানা! যাদের নম্বরটি ছিল রাউন্ড ফিগার- যেমন ১৫০০, ১৬০০, ১৭০০…তাদের তো ভাবে মাটিতে পা’ই পড়ত না! – হোয়াট!! তুমি আমার ক্যাডেট নম্বর জান না? আমার টা হল… কলেজ থেকে বের হবার পরও ক্যাডেট নম্বরের গুরুত্ব কমে না। বিভিন্ন পাসওয়ার্ড এর ক্ষেত্রে ক্যাডেট নম্বরটি যে কারো প্রথম পছন্দ- অন্ততঃ পাসওয়ার্ড এর একটি অংশে হলেও নম্বরটি থাকতে হবে! বিভিন্ন অনুষ্ঠান- গেট-টুগেদার, বিয়ে, জন্মদিন-এ বন্ধুদেরকে আমন্ত্রণ জানানোর ক্রমটাও কিন্তু ক্যাডেট নম্বর অনুযায়ী! সিনিয়রদের বেশীরভাগ নম্বর ভুলে গেলেও বন্ধুদের কারও ক্যাডেট নম্বর এখনো ভুলি নি, ভোলা হয়ত সম্ভবও নয়। আর নিজেরটা?! নিজেরটা যেদিন ভুলে যাব, সেদিন বুঝব মৃত্যুর আর বেশি বাকি নেই… |
Mahmood Haider Khan,
6/
332
|
কলেজে প্রথম ঘন্টা// কলেজে প্রথম ঘন্টা // মোঃ মাহমুদ হায়দার খান (কলেজের প্রথম বার্ষিক পত্রিকা „প্রভাতি“র প্রথম সংখ্যায় প্রকাশিত) পু পু ... ... ... । ঢংঢংঢং ... ... ... । উহঃ বুঝি ঘন্টা বাজল । দিল ত এত মজার ঘুমটা ভেঙ্গে । বেশতো স্বপ্নের দেশে ঘুরছিলাম । কার এখন ইচ্ছে হয় বিদেশের আনন্দলোক ছেড়ে. ক্যাডেট কলেজের বাস্তব জগতে ফিরে আসতে । মনে হয় ডিউটি ক্যাডেটকে ধরে দিই গোটা দুইচার … । বেটা ডিউটি ক্যাডেট তোমার চোখে কিঘুম নেই ? তোমার ঘুমাতে ইচ্ছে করেনা ? শুধুশুধু আর একজনকে বিরক্ত কর । এর পর শুরু হল বাঁশীর বেসুরো তীব্র চিৎকার । বেয়াড়া বাঁশীটা এই সকাল বেলাতেই যেন বেশী শক্তি দেখায় । ওর শব্দ আমার বহু শিক্ষকের হাতে ষ্পর্শ (ক্যাডেট কলেজের নয়, ও সব বালাই এখানে নেই) ধন্য হওয়া শ্রব নেন্দ্রিয়দয়ে নিষ্ঠুর ভাবে প্রবেশ করে বলে এখন ওঠ । আর ঘুমাতে হবেনা। তবুও বিছানার সঙ্গ ছাড়তে ইচ্ছে করেনা । কিছক্ষণমন খারাপ করে শুয়ে থাকি আর মনে মনে ভাবিছ’বছর অতিক্রম হওয়ার আর কত বাকী । কবে পাব এ থেকে নিষ্কৃতি। এর পর এল ডিউটি ক্যাডেট । এসেই দিল ওই তিব্র বাতিটা জ্বালিয়ে । তার আলোর ধাক্কাটা চোখে সামলে না নিতেই ডিউটি ক্যাডেট বিছানা ছেড়ে ওঠাবার চেষ্টাকরলো আমাকে । মনে মনে ডিউটি ক্যাডেটের মুন্ডপাত করলাম বহুবার । মুখে বললাম”তুমি যাও, আমি উঠছি ।” তবুও হত”ছাড়া ডিউটি ক্যাডেট নাছোড় বান্দা । শেষ পর্যন্ত তার ঠেলা ঠেলিতে না উঠে পারা গেলনা । উঠলাম ঢুলতে ঢুলতে । বেশ শক্তি সঞ্চয় করে দুপায়ের ওপর ভর করে দাঁড়ালাম । কষ্ট করে টুথপেষ্টের মুখটা খুলে ব্রাশের ওপর নিলাম খানিকটা । তারপর তোয়ালেটা হাতে নিয়ে বহু কষ্টে এগিয়ে চললাম বাথরুমের দিকে । দাঁতগুলো অর্ধেক মাজাহয়ে গেছে । চিন্তা করছিলাম মুখটা ধুয়ে বন্ধদের সাথে একটু গল্প করব । কিন্তু সেইমুহুর্তেই আমার সব চিন্তার অবসান ঘটিয়ে পড়ল পি, টি.র ঘন্টা । কোন মতে তাড়া তাড়ি মুখটা ধুয়ে নিয়ে ডরমিটরিতে এলাম । পোষাক বদলালাম বহু ধৈর্য্য ধরে । এরই মধ্যে সবাই বাইরে পি, টি,র জন্য দাঁড়িয়ে গেছে । ডিউটি ক্যাডেট দু’একবার এসে হাকদিয়ে গেল । তারপর আমি আমার ”ষ্কোয়াডের”দিকে চললাম । এবার আবার ধরল হাউস লীডার । সব প্রশ্নের জবাবদিহি করতে হল কিছু বুদ্ধি খরচকরে । তার প্রশ্ন- ”দেরীহল কেন ? আমার আর কি বলার থাকতে পারে ? শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ মাথা চুলকালাম । বললাম, ’আর হবেনা । এবারের মতো মাফকরে দিন ।” যা হোক এখান থেকে কোন মতে ছাড়া পেলাম । তারপর আমার ষ্কোয়াডে দিয়ে দাঁড়ালাম । এরপর এল চরম মুহুর্ত-দৌড়। এক একটা পা ফেলার আগে সব শক্তি এক করে নিতে হয় । ইচ্ছে করে - দৌড় থামিয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি । তারও পর অন্য ছেলেরা যে লম্বা লম্বা পদক্ষেপ নিচ্ছিল তাতে আমার ওদের সাথে পা মিলিয়ে যেতে না পারায় প্রাণটা বুঝি চলে যাচ্ছিল। সামনের দিকে তাকাতেই অবস্থা কাহিল হয়ে গেল । দেখি এখনো অনেক পথ বাকী – সেই বদর হাউস থেকে সব বাষ্কেট বলগ্রাউন্ড পর্যন্ত । মনে হল এতদুর দৌড়াবার আগেই পড়ে যাব । যাই হোক এভাবে দৌড়ানোর পর ব্যায়াম করবার যায়গায় এসে পোঁছলাম । এরপর শুরু হল পি, টি । সে কি ঝামেলা ! ওই লাফালাফি, হাত-পা নাড়া । যখন দেখতাম ষ্কোয়াড-লীডার একটু অন্য দিকে নজর দিয়েছে, অমনি দাঁড়িয়ে পড়তাম । কিন্তু আমার দিকে তাকাতেই আবার শুরু করতাম । মাঝে মাঝে অবশ্য দু’একবার চোখে পড়ে গেছি - পাওনা স্বরুপ কিছু কথাও আমাকে হজম করতে হয়েছে । পি, টি হওয়ার পরে শুরু হল’পুশ-আপ’- সেই হাতের পরে ভর করে নীচে যাওয়া আর ওপরে ওঠা । আমি ঘাসের উপর শুয়ে থাকলাম । যখনই ষ্কোয়াড-লীডার আমার দিকে তার সুনজরটা দিত –বহু কষ্টে হয়ত একটা দিতাম । শেষ পর্যন্ত পি, টি শেষ হল । হাউজে গেলাম । সকালে রেখে যাওয়া অগোছালো বিছানা আর মশারী ঠিক করলাম । তারপর গোছলকরে, পোষাকবদলালাম । এখন বসে বসে চিন্তা করছি দিনের এক ঘন্টা কাটল কোনমতে, এখন বাকী কয় ঘন্টা কাটবে কিভাবে । |
Mahmood Haider Khan,
6/
332
|
আমার স্বর্গীও বন্ধু আফাক হোসান (৬/২৭৬) এর ডাইরি থেকে13th January, 1971, Wednesday 29 Poush 15 Jilqad. We had cross-country rehearsal house wise. Junior group was to run 2 and half miles. I became 21st out of 34. We had a film show named - Black beard ghost. It was quite a nice picture. ক্রস কান্ট্রি রিহার্সালের এই দৌড়ানো ছিল আমাদের বিশাল খেলার মাঠের চারপাশে যে পিচঢালা পথ ছিল তার উপর দিয়ে। আমরা সাধারণত মধ্যম গতিতে দৌড়াতাম। বেশি জোরে দৌড়ালে ভয় ছিল যে আড়াই মাইলের এই দৌড় পুরা করতে পারবো না।দৌড়ানো পুরা করার সময় আমাদের শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বেরিয়ে যেত।এজন্য দৌড়ানো শেষ হলে একটা কম্বল দিয়ে আমাদের পেচিয়ে রাখা হত কিছু সময়। আর এক মগ লবণাক্ত পানি পান করতাম। ইংলিশ ফিল্ম প্রথম ক্যাডেট কলেজে এসেই দেখি।সিনেমা দেখানো হত আমাদের অডিটোরিয়ামে।এই অডিটোরিয়াম আবার আমাদের এ্যাসেমবিলি হল ও এস এস সি ও এইচএসসি পরীক্ষার হল হিসাবে ও ব্যবহৃত হয়েছে। আমাদের সিনেমা দেখানো হত রাতে ডিনারের পরে। .............................. 14th January, 1971 30 Poush 16 Jilqad. On this day we had an English lunch. The items were( 1)bread and chicken. (2)bread and egg.( 3)boiled potatoes (4)chop.(5)boiled green beans. (6)one square plate of soft sweet. We had semi final cross-country race today. I got 78th position among 101 cadets. ........................................ 15th January, 1971 Friday On this day we had everything like other Fridays. But we saw a busket ball match between Baluch regiment team and our college basketball team. Unfortunately we lost the game. ইংলিশ লাঞ্চ আমাদের নিয়মিত লাঞ্চ ছিল না। মাঝে মাঝে দেওয়া হত। লাঞ্চ ও রাতের ডিনারের ১৫ মিনিট আগে কিছু ক্যাডেট ডাইনিং হলে চলে আসতো। বিশাল এই ডাইনিং হলে ১০০/১৫০ জনের বসে খাওয়ার ব্যবস্তা ছিল। অনেক গুলো ডাইনিং টেবিল ছিল। প্রতিটি টেবিলে ১০ বা ১২ জনের (সঠিক সংখ্যা মনে পড়ছে না) ব্যবস্তা ছিল। টেবিলের উপর কর্মচারীরা আগে থেকেই ভাত, মাছ বা মাংসের তরকারি, ভাজি,ডাল দিয়ে রাখতো।যেসব ক্যাডেটরা আগে থেকে ডাইনিং হলে চলে আসতো তাদের বলা হত server.প্রতি টেবিলের জন্য দুই জন। তারা খাবার প্লেটে ভাত, তরকারি, ভাজি, মাছ বা মাংস, ডাল ইত্যাদি সবই বেড়ে রাখতো।কিছু সময় পরে বাকী ক্যাডেটরা এ্যাকাডেমী ব্লক থেকে ডাইনিং হলে চলে আসতো। সবাই যার যার জায়গায় বসে যেত। ডাইনিং হলের শেষ দুই প্রান্তে দুইটা লম্বা ডায়াস ছিল। তার উপরে ২টা বা ৩টা ডাইনিং টেবিল লম্বা ভাবে পাশাপাশি রাখা ছিল। এখানে কলেজ লিডার, হাউজ লিডার, এ্যাসিসট্যান্ট হাউজ লিডার বসত।একজন শিক্ষক ও বসতো।অনেক সময় প্রিন্সিপ্যাল স্যার ও বসতেন। তারা খাবার খেয়ে দেখতেন ঠিক আছে কি না। সবাই বসে যাওয়ার পরে কলেজ লিডার উঠে দাড়াতো।তার সামনে টেবিলে ছোট একটা ঘন্টা ছিল। সেটা তিনি বাজালে সবাই চুপ হয়ে যেত। এরপর তিনি বলতেন, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। এরপর খাওয়া শুরু হত। শুক্রবারে জুমার নামাজ আমরা কলেজ মসজিদে পড়তাম। আমরা তখনও পাকিস্তানের সাথে আলাদা হয়ে যাইনি। মাঝে মাঝে পাকিস্তান আর্মির বিভিন্ন রেজিমেন্ট আমাদের কলেজে আসত এবং ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলতো। (এত বছর পর অনেক কিছু আমার মনে নেই। এজন্য ঐ সময়কার ক্যাডেটদের কাছে অনুরোধ করছি তারা এই লেখার সঙ্গে, তাদের যা মনে আছে তা লিখে জানাবেন। ধন্যবাদ।) |
Mahmood Haider Khan,
6/
332
|
আমার স্বর্গীও বন্ধু আফাক হোসান (৬/২৭৬) এর ডাইরি থেকে (২)Saturday 16th January 1971. Khaibar House. ২রা মাঘ,১৮ই জিলক্বদ। After the 7th period we did not have the normal self reading class. We came back to our houses. After some time we went to the dining hall and had our lunch. The lunch was not normal. It was an English lunch. The items were same like the lunch of 14th January. After the lunch we took rest until the tea time as there was no prep and no society. Today we had the final cross-country race competition. I had a mind to get a better position than previous. I got the position 68th among 101 cadets. Last time I was 78th. At night we had a Bengali film show. It 's name was " Patal purir Rajkonnya". The main two artists were Azim and Sujata. ফাইনাল ক্রস কান্ট্রি রেসের কিছু অংশ ছিল কলেজের বাইরে আর কিছু অংশ ছিল কলেজের ভিতরে। কিছু দূর পরপর একজন করে শিক্ষক দাঁড়িয়ে থাকতেন, কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না দেখার জন্য। 17th January, 1971, Sunday. ৩রা মাঘ,১৯শে জিলক্বদ -------------------------------------- It was a holiday, normal holiday of the week. We had Monday Parade Practice before the milk session. After milk we saw a friendly cricket match played between our collage team and the cricket team of Daud Public High school. They came to play different friendly matches with us. Today I played hockey in the afternoon. I had my hair cut by barbar. 18th January, 1971, Monday. ৪ঠা মাঘ।২০শে জিলক্বদ। _------------------------------- I got up quickly after the first siren because there was the Monday Parade.. For the parade I dressed up myself as nicely as possible for me. On the parade, our adjutant captain Zafor Iqbal came late and he checked the front row of every house. I was in the last row and was not chacked. There was no worst dressed Cadet and two boys were declared as the best dressed cadets. One from class seven, name is Zahid Mubarak of Badr house and another is from from class nine, Musaddequl Anam of the same house. Badr house became the best house in the parade. In the afternoon we had P. T. (physical training) rehearsal. In the evening after Magrib prayer there was Inter house Kerat (recitation from the holy Qoran) competition. Khaibar House became the best and Tareq Mohammad of class nine of the same house became the best reciter of the evening. We had the last prep but there was no five minutes break. আমাদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল রবিবার। চুল কাটার জন্য নাপিত আনা হত ঝিনাইদহ বাজার হতে। তারা হাউজে এসে চুল কেটে দিয়ে যেত।তাদের প্রতি নির্দেশ ছিল চুল অনেক ছোট করে কাটা। এ রকম চুল কাটার নাম দেওয়া হয়েছিল 'বাটি ছাট'। যেন মাথার উপর একটা ছোট বাটি রেখে বাটির বাইরের সমস্ত চুলকে চামড়া পর্যন্ত ছেটে ফেলা। Monday parade আমাদের ডিসিপ্লিন শেখার একটা অন্যতম অংশ ছিল। রোববারেও parade practice করানো হত।ডিসিপ্লিন শেখার সাথে সাথে এটা আমাদের জন্য একটা ভীতিকর ব্যাপারও ছিল। এখানে যে সবচেয়ে বেশি well dressed হত তাকে এ্যাসেম্বিলী হলে ছাত্র শিক্ষক সবার সামনে স্টেজের উপর ডাকা হত।প্রিন্সিপাল Coln. M.M. Rahman স্যার বলতেন He is today's 'Best dressed cadet'.তখন অন্যান্য ক্যাডেটরা ও শিক্ষকবৃন্দ তুমুল করতালির সাথে তাকে অভিনন্দন জানাতো।গর্বে তার বুকটা ফুলে উঠতো। ভীতিকর ব্যাপারটা ছিল যে যার dress up সবচেয়ে খারাপ ছিল তাকে ও স্টেজে সবার সামনে ডাকা হত।Principal স্যার ঘোষণা করতেন,He is the worst dressed cadet today.তার মুখটা লজ্জায় অপমানে নিচু হয়ে যেত। কোন অভিভাবক কি তার ছেলেকে এভাবে demoralised হবার জন্য ক্যাডেট কলেজে পাঠিয়েছে? পরবর্তী অধ্যক্ষ স্যার ব্যাপারটা অনুধাবন করতে পেরে ছিলেন। তিনি এভাবে স্টেজে ডেকে এনে worst dressed cadet ঘোষণা বন্ধ করেন। তিনি হাউজ মাস্টার দের বলে দেন যে যার dress up খারাপ হবে তার প্রতি special care নিতে এবং তাকে একটা নতুন dress দিতে। Best dressed Cadet ঘোষণা আগের মতই চলতে থাকে। -- |
Mahboob Haider Khan,
6/
289
|
Saturday Special(Published in annual College Magazine in 1975) There goes the bugle. Reveille ---. The duty cadet comes up to each bed and shouts "Get up". "Oh, what a nonsense boy you are! What hell you wake me up from my heavenly sleep? "Oh dear, today is Saturday; it is not like other days. So don’t get worried." The duty cadet replies. It is only then that the sense of punctuality pricks our conscience and we don’t get late for the morning P.T. It’s a great sacrifice indeed on our part for the majestic royal guest, "Mr. Saturday." After P.T., bathrooms get crowded by the unusually large number of visitors. All become enthusiastic to accord a hearty welcome to the captivating Saturday. Bread, chop, sweet and a cup of tea in the breakfast are something more than delicious and saucy. "Squad, by the right, quick march"…….. the command from the commander and the cadets, well dressed in Khaki, armed with zeal and fascinated by the potential "film show", march smartly to the academic block for their lessons. The classes break at 12-40. Then follows the lunch. At the dining table, hot chats go on covering every sphere of college life making the dining hall quite noisy. When lunch is over we take rest. The wild whistle blows. "Boys go for Society." The House leader starts shouting. During the Society period Music society puts music on air, Technical skill prepares for "Expo", would-be Newtons are born in Physics Society. Society hours are thus spent profitably. Thereafter we go for tea. With the whistle games start in the fields. ‘Goal’! ‘Basket’! are the words heard by a visitor in the games arena of our college The games are over. It’s the time now to go for prayer. We chuckle thinking over the ensuing "film show" going to be screened in the evening. Soon we go to the mosque, and after prayer we step out to rush towards the House and get ready for the dinner. We take our chicken dinner and soon get ourselves seated in the auditorium. The last bell goes; "Lights off" ……….. The film is on, the charm of Saturday starts. The romantic queen of Saturday appears on her golden throne. Its power of enchantment is so great that it holds us spellbound despite all the tiring hazards throughout the week. It is like a bright gem in a dark cave to us. The film show is over, we go to our beds which bring an end to the coveted Saturday of our life in this college. Saturday is a moment of incentive for us to achieve the cherished goal of our college life. |
Shahan Shah,
5/
273
|
Saturdays in our college life - unforgettable events5th intake joined JCC on 8th July 1968, we were considered a unique and lucky bunch as we found our great seniors of 1st intake in class 11 who were the leaders followed by our seniors of 2nd, 3rd and 4th intake. In the year 1969, we had then 6th intake as our junior, so the entire cohort was a blend of seniors and juniors, with multi-talented cadets. I still remember the first days, weeks and months of our college life vividly. While I was adjusting to the tough and regimental routine, picking up English and many other chores, it was also amusing to see the dynamic leaders of our 1st batch and all other seniors down to my "Locker partner" from 4th intake, each assigned a leadership role. Time was passing sometimes with struggle, learning, developing but nevertheless those were the precious days of my life that made me what I am today. We can all write hundreds of pages on our college life and activities, but that is not what I am going to write, rather I would recall the Saturdays in our college life. We were growing and adjusting to the different activities we had on each day of the week like Sunday dormitory inspection, Monday parade, Wednesday current affair speech and so on. Most of us will agree that Saturday was unique, a day we all looked forward to since it was packed with amusements and luxuries. By the time I was in class 10 and eyeing to enter the college football team, I was filled with excitement thinking of the football matches we had on Saturdays. On Saturday after the usual morning PT and classes, the first adventure of the day started with Co-curricular activities in the afternoon. We had "Societies" ranging from Arts and crafts, Literature, Music, Photography, Military science, band party and so many others offered to us to hone our creativity and gain avocation. We painted clay potteries which looked like works of painters, sang songs and played musical instruments with laughter, those in military science boasted about the war tactics and so on. The two-hour session seemed to pass very quickly and soon enough we would head to the dining hall for our afternoon snack which was usually mouthwatering "Nimki" or "Samosa" with tea. Occasionally, a Football or Basketball match during Saturday afternoon raised our spirits high and was exciting. Dinner on Saturdays in our time was a sumptuous meal and all would agree that it was the most craved dinner of the week. Dressed in white with tie and a smile on everybody's faces, the atmosphere was more than just a dining hall away from home. I clearly remember the dinner menu which mostly consisted of "Peas Pulao", "Chicken Korma" or "Curry","Potato chop". We couldn't wait to start as soon as the Dining hall Leader announced "Bismillahir Rahman er Rahim". One could easily tell by looking at the cadets how delicious the food was. I remember we were so focused on the food that at times we wouldn't notice our principal, Late Col Rahman quietly standing behind and watching us. The last item desert used to be "Shahi Tukra", it was so unique that I have yet to find such tasty "Shahi Tukra" elsewhere. After 50 years, I can still feel its taste and flavour. Did we ever think that behind this luxurious dinner was the hard work of our kitchen staff and the ever-caring team of "Bhuiya Bhai", who we all shall always remain indebted to. Many of them have left this world and the least we can do is to keep them in our prayers. Following the dinner was the most interesting event of the day - movie time. We would rush to the auditorium to get a better seat, but in discipline. Without fail, there would be a movie screening every Saturday either in English, Hindi or Bengali. Starting from war movies like, "Bridge on the river Kawaii" to Bengali heart-breaking drama "Harano Shur", acted by the legendary romantic couple Uttam-Shuchitra which was so touchy and emotional that I recall one of my classmates seated next to me breaking down to tears and crying aloud, we watched a wide variety of movies on Saturdays. Looking back after all these years, I am sure we all remember our Saturdays in JCC, the routines and events so vividly which we will carry in our memories till our last breath. |
Ekram Kabir,
15/
857
|
বাবা-মা চিরদিনই বাবা-মা¾আমার বাবা ঝিনাইদাহ ক্যাডেট কলেজের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষক হিসেবে তাঁর অবদান আমার জীবনে অনেক। তবে তাঁকে আজ শিক্ষক-রূপে চেনাতে চাইছি না। বাবা-রূপে চাইছি। আমরা যখন খেলতাম তিনিও প্রায়ই আমাদের মাঝে থাকতেন, খেলতেন। বেশ কয়েকটি খেলায় তিনিও খুব ভাল ছিলেন। ডিউটি মাস্টারদের ক্যাডেটদের মাঝে থাকতেই হত। শুধু সে কারণেই তিনি আমার আশে-পাশে ঘোরাঘুরি করতেন তা নয়। তিনি কাছে থাকতেন তাঁর ছেলে খেলছে বলেও। ব্যপারটি আমি প্রথম টের পাই দশম শ্রেনীতে পড়ার সময়। আন্তঃহাউস বাস্কেটবল প্রতিযোগিতা চলছে। আমি খেলছি। তিনিও আছেন মাঠের কিনারে। খেলতে খেলতে হঠাৎ টের পেলাম যে আমার বাবাও আমার শারীরিক নড়াচড়ার সাথে তাল মিলিয়ে তাঁর শরীরও নড়াচ্ছেন। মনে হচ্ছে আমি নয়, তিনিই আমার হয়ে খেলছেন। কিছুদিন পর ভলিবল। মাঠের কিনারে তিনি। এই খেলায় অনেক উঁচুতে লাফিয়ে উঠে নেটের ওপর দিয়ে চাপ মারার একটি ব্যপার ছিল। আবিস্কার করলাম যে আমি চাপ মারতে গেলে তিনিও মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে চাপ মারার একটি ভঙ্গিমা করতেন। আমার বন্ধুদের কাছে কানতে চাইলাম আমার বাবা আসলে কেমন ভঙ্গিমা করেন। তারা জানালো তিনি এ কাজটি খুবই আবেগের সাথে করেন। মনে হয় তিনি যেন তাঁর শক্তিটুকুও তাঁর সন্তানের মাঝে চালনা দিতে চান। আমার একটি ছবি আছে যেখানে আমি বর্ষা নিক্ষেপ করছি। ছবিতে তাঁকেও দেখা যাচ্ছে। পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। শুধু দাঁড়িয়ে নয়; তিনি তাঁর শরীর বাঁকিয়ে আমার বর্ষা ছোঁড়ার সাথে তাল মেলাচ্ছেন। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে তিনি চাইছেন তাঁর ছেলে যেন আরো জোরে ছুঁড়তে পারে তাই মানসিক ভাবে তাঁর শক্তিটুকুও আমার মাঝে বইয়ে দিতে চাইছেন। ব্যপারটি আমার কাছে এত ভাল লাগতো যে এই ইদ্রীস স্যার কাছে থাকলে আমার মনোবল দ্বিগুন হয়ে যেত। হয়তো বাবা বলেই তা হত। বুঝতাম বাবা-মায়ের মানসিক সমর্থন সন্তানের জন্য প্রচন্ড একটি শক্তি যা তাদের কাজেও প্রতিফলিত হয়। আমার বাবা যে আমায় তাঁর মানসিক বল আমার মাঝে পুরে দিতেন তা আমি সারাজীবন টের পেয়েছি। আমার বন্ধুর বাবাদেরও আমি লক্ষ্য করেছি। তারাও একই ভাবে তাঁদের মানসিক শক্তি তাদের সন্তানদের মাঝে রোপণ করার চেষ্টা করতেন। অবশ্য এক-এক জনের ধরন ছিল এক-এক রকম। আমি যখন পড়াশোনায় বা খেলাধুলায় খুব ভাল করতাম, স্পষ্ট বুঝতে পারতাম বাবা মাথা উঁচু করে হাঁটতেন। আমার সার্থকতা যেন তাঁরই। কোন কিছু না পারলে তাঁর মন খারাপ হত। অনেক কাল পর আমি নিজে যখন বাবা হয়েছি, আমি একই রকম করে আমার সন্তানদের মাঝে আমার মনের শক্তিটুকু তাদের অজান্তেই তাদের মাঝে চালনা করে দিই। এই মানসিক বলের খেলাটি সারাদিনমান চলতে থাকে। এই শক্তি প্রচ্ছন্ন ভাবে বোঝা যায় না; একটু খেয়াল করলে বোঝা যায়। আমার স্ত্রী যখন আমাদের সন্তানদের ধরে দোয়া পড়ে তাদের কপালে ফুঁ দেয়, তখন আমার মন থেকেও একটি ফুঁ তাদের উদ্দেশে বেরিয়ে যায়; তারা টের পায় না; আমার স্ত্রীও না। বাবা-মায়ের দোয়া করার প্রথা শুধু একটি যুগের মধ্যে আবদ্ধ নয়। হাজার বছর আগেও ছিল, হাজার বছর পরও থাকবে। এ এক আশ্চর্য সম্পর্ক। এ এক চিরকালীন সম্পর্ক! বাবা আমায় খুব বেশি শাষন করতেন না। তিনি জানতেন যে আমি হয়তো তাঁর বেশির ভাগ উপদেশই শুনব না। তাই অনেক কথা তিনি আমার বন্ধুদের মাধ্যমে আমায় জানাতেন। তবে আমি আশা করতাম তিনি যেন আমায় সরাসরি বলেন। আমরা দু-ভাই যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, বাবা তখন ঢাকার মোহাম্মাদপুর প্রিপারেটরী স্কুলের অধ্যক্ষ। স্কুলের ভবন তোলার দ্বায়িত্য তাঁর হাতে। এক রাতে খবর এল কারা যেন ভবন নির্মাণের জন্য রাখা ইট চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। বাবা তখনই ছুটলেন। আমরা দু-ভাই তাঁকে থামিয়ে বললাম, "আপনি একা যাবেন না; আমরাও যাব; কেউ যানে না সেখা কি অপেক্ষা করছে"। বাবার চেহারায় এমন একটি তৃপ্তি উদ্ভাসিত হল যে তা বলে বোঝানো যাবে না। তাঁর পাশে হাঁটতে পেরে দু-ভাইয়ের জীবন সার্থক মনে হয়েছিল। আরেকটি গল্প বলি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষে। বই পড়তাম অনেক। একবার ১৪০০ পৃষ্ঠার একটি ইংরেজী উপন্যাস শুরু করেছি। এত ভাল লাগছিল যে বাড়ি থেকে কোথাও বেরুচ্ছিলাম না। ক্লাসেও যাচ্ছিলাম না। ঘুম নেই, শুধু খাওয়া-দাওয়া করছিলাম আর পড়ছিলাম। এভাবেই তিনদিন-তিনরাত কাটিয়েছি। বাবা ফজরের নামাজ পড়তে উঠে দেখতেন আমি পড়ছি, আপিসে যাওয়ার সময় দেখতেন আমি পড়ছি, আপিস থেকে ফিরে দেখতেন আমি পড়ছি। তিনদিনের মাথায় তিনি আর সহ্য করতে পারলেন না। বললেন, "তুমি যাও তো; বাইরে থেকে বেড়িয়ে এস; তোমায় সারাদিন পড়তে দেখতে আর ভাল লাগছে না"। তিনি আমায় বুঝিয়েছিলেন যে তিনি বিরক্ত, তবে তার চেহারা দেখা বুঝেছিলাম আমার পড়া দেখে তিনি একটি অন্যরকম সুখ পেয়েছিলেন। আমি হেসে, বই বন্ধ করে বাইরে ঘুরতে গিয়েছিলাম! মা অবশ্য চাইতেন আমি বাড়িতেই থাকি; বই নিয়েই থাকি। তাঁর কাছে এসে বইটি পড়ি। মাঝে-মাঝে করতামও তাই। তিনি যখন হেঁসেল ঘরে ব্যস্ত, আমি দরজায় পিড়ি নিয়ে বসে পড়তাম; তাঁর ভাল লাগতো। মায়ের কথাতো বলে শেষ করা যাবে না। পৃথিবীর কোটি-কোটি সন্তানের কাছে জানতে চাইলেই সবাই একবাক্যে বলবে যে তাদের মায়েরা তাদের সবচেয়ে প্রিয়, জীবনে মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি, মা ই সবচেয়ে বেশি ভালবেসেছেন। এর চেয়ে বড় সত্য আর পৃথিবীতে দু-টি নেই। বাবাকে এক-এক জন এক-এক রকম করে পেলেও, মাকে সবাই ঠিক একভাবেই পায়। তাঁদের কোন রকমফের নেই। মা চিরন্তন। মায়ের কথা মনে হলেই মনের ভেতর একটি গান ঘুরপাক খেতে থাকেঃ "মায়ের একধার দুধের দাম, কাটিয়া গায়ের চাম, পাপোশ বানাইলেও ঋণের শোধ হবে না, এমন দরদী ভবে কেউ হবে না আমার মা, মা গো " । বাড়ি ফিরতে রাত হলে, বাবা না খেয়ে, রাত জেগে বসে অপেক্ষা নাও করতে পারেন, তবে মা এ ব্যপারে অবিচল; সন্তান বাড়ি আসবে, তারপর তাঁর শান্তি। সন্তানের প্রতিটি কাজের সঙ্গে মায়ের প্রচ্ছন্ন অবদান। মনে পড়ে ১৯৮৪-৮৫ সালের কথা। উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিক্ষা দিয়ে বেড়াচ্ছি। বাবা তখন দেশে নেই, নাইজেরিয়ায় গেছেন চাকরি নিয়ে। আমরা থাকি আমাদের নানাবাড়ি কুষ্টিয়ায়। আমি একাই সব স্থানে যেতে পারি - ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর। কিন্তু মা আমায় একা ছাড়েন নি। তিনি এই সবগুলো স্থানে আমায় নিয়ে গেছেন। নিজের উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা আর দেয়া হয় নি, কিন্তু ছেলের ভর্তি পরীক্ষার জন্য তিনি সারা দেশ চষে বেড়িয়েছেন। এখন বুঝি তিনি তখন আমার আবার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আমরা যে সময়টিতে বেড়ে উঠছিলাম তখন আমাদের মায়েদের সংসারে সরাসরি অর্থনৈতিক অবদান রাখার সুযোগ অনেক কম ছিল। তাঁদের বেশিরভাগই হোম-ম্যানেজমেন্টে ব্যস্ত থাকতেন। আমার বাবা ক্যাডেট কলেজের শিক্ষক হওয়ায় তাঁর সংসার চালাতে বেশ কষ্ট হত। পালা-পার্বনে আমারদের জন্য নতুন কাপড় কিনতে পারতেন না। আমাদের বাড়ির আঙ্গিনাতেই বাবা সব রকমের শাক-সব্জি ফলাতেন। সেই শাক-সব্জি আমার মা প্রতিবেশিদের কাছে বাজারের চেয়ে কম মূল্যে বিক্রি করে আমাদের জন্য নতুন কাপড়ের ব্যবস্থা করতেন। এখন ব্যাপারটি আমার মনে হলেই মন আনন্দে ভরে যায়। কে বলেছে আমার মায়ের সরাসরি অবদান ছিল না? এ বুদ্ধিটিতো বাবার মাথায় আসে নি! আজকাল আমার কেন যেন মনে হয় আধুনিক বাবা-মা তাঁদের সন্তানদের বন্ধুদের সাথে খুব বেশি চেনেশোনা নেই। ছেলেমেয়েও খুব একটা তাদের বন্ধুদের সাথে মা-বাবার পরিচয় করিয়ে দেয় না। আমাদের সময় ব্যাপারটি ছিল একেবারেই অন্যরকম। আমাদের বন্ধুদের বাবা-মা; বিশেষ করে মায়ের সাথে আমাদের ছিল অতল পরিচয়। বন্ধুর মা আমাদের সাথে নিজের মায়ের মত আচরণ করতেন, নিজের মায়ের মত শাসন করতেন। আমরা বন্ধুর বাড়ি গিয়ে কখনও ড্রইং-রুমে বসতাম না। হয় বন্ধুর ঘরে, না হয় বন্ধু বাড়ি না থাকলে তার মায়ের সাথে একেবারে হেঁসেল ঘরে, যেখানে মা রান্নার কাজে ব্যস্ত। হেঁসেলে পিড়ি পেতে বসলেই বন্ধুর মায়ের রান্নার কড়াই থেকে খাবার উঠিয়ে খেয়েছি কতবার তার ইয়ত্তা নেই। বন্ধুর মা যাবতীয় ঘর-সংসারের আলাপ আমাদের সাথে করতেন। এই ঘর-সংসারের আলাপের একটি বড় প্রভাব আমাদের জীবনে পড়েছে তা আমরা এখন টের পাই। ক্যাডেট কলেজ যখন ছুটি হত; আমার বন্ধুরা যারা ঢাকা-চট্টগ্রাম যাবে তারা খুব সকাল-সকাল চলে যেত, কিন্তু যারা যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গা ও ইশ্বরদি যাবে তারা সবাই আমাদের বাড়ি এসে ভিড় করতো আমার মায়ের হাতের রান্না খাবে এবং বাড়ির পরিবেশে আড্ডা মেরে তারপর রওয়ানা দেবে। মা তৈরীই থাকতেন। বন্ধুদের জন্য নানা রকমের পিঠা-পুলি, পরাটা-মাংস বানিয়ে রাখতেন। মা এমনটা বহুবার ক্যাডেট কলেজে প্যারেন্টস্ ডে-তেও করেছেন। আমার বন্ধুদের অনেকের বাবা-মায়ের প্যারেন্টস্ ডে-তে ছেলেকে দেখতে আসা সবসময় সম্ভব হত না। মা তাদের জন্যেও প্রচুর খাবার-দাবার বানিয়ে আমায় দেখতে আসতেন। মাকে নিয়ে শুধু আনন্দের কথাই বলে যাচ্ছি। তিনি আমায় অনেকবার অনেক কষ্টের সমুদ্র পাড়ি দিয়ে সাহায্য করেছেন, সে কথাগুলো আজ বলবো না। সেগুলো আরেক দিনের জন্য রেখে দিলাম। কিংবা হয়তো বলবোই না। বাবা কি মা, তাদের দু-জনের আবেগ এবং সন্তানদের আগলে রাখার পন্থা আমাদের কাছে দু-রকম মনে হতে পারে, কিন্তু তাঁরা দু-জনেই সন্তানের জন্যই বাঁচেন, উপার্জন করেন, কষ্ট করেন তাঁদের নিজেদের জন্য নয়। তাঁদের অবদান যে নিঃস্বার্থ তা আমরা সময়কালে বুঝি না, সময় শেষ হলে বুঝি। FacebookTwitterTeilen Posted in MemoriesTagged ইকরাম কবীর, একেএম ইদ্রীস হোসেন, বাবা, বাবা-মা, বাবার ভালবাসা, মা, মায়ের ভালবাসা, লায়লা হোসেন |
Reza,
13/
777
|
College daysHappenings of our time নিয়াজ ভাই সালাম। আমরা সেভেন্থ ইনটেককে বেশিদিন পাইনি। এইট্থ ইনটেকের নেতৃত্বে বেশি গার্ডেনিং করেছি। কলেজে ঢুকার পরপর ঠিক প্রথম রোববার থেকেই আমাদের খায়বার হাউজের গার্ডেনে ঢোকানো হয় যখন অন্য দুই হাউজের বন্ধুরা মাঠে ফুটবল বা ক্রিকেট খেলেছে। এই গার্ডেনিং এর সাথে আমাদের বহু কান্না জড়িত আছে। গার্ডেনিংটা আসলে সোসাইটির মতো ঐচ্ছিক থাকলে ভালো হতো। অর্থাৎ যার ইচ্ছে ফটোগ্রাফি সে ফটোগ্রাফি নিবে আর যার ইচ্ছে গার্ডেনিং নিবে। শিশু বয়সে খেলার সময় বা রোববার সকালে ছুটির দিন বলপূর্বক গার্ডেনিং করানো অনকটা শিশুদের প্রতি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মতো ছিল। নাঙ্গল বা ট্রাক্টরের পরিবর্তে ক্লাশ সেভেন এইটকে দিয়ে মাটি কুপিয়ে গার্ডেন বড় করে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা আমার কাছে প্রাগৈতিহাসিক দাসত্বের মতো মনে হোত। শিশু বয়সে ক্লাশ সেভেনে কোদাল দিয়ে মাটি কোপানো সহজ কাজ নয়, হাতে ফোস্কা পড়ে রক্ত বের হোত। এই কঠোর কাজটার জন্য জন মজুর নেওয়া উচিত ছিল। ডায়রি ফার্ম থেকে কাঁচা গোবর হাতে, বালতিতে করে আনা ছিল আরেকটা মানসিক কষ্টের বিষয়। খায়বার হাউজের পিছনে যে পুকুর ছিল মাঝেমধ্যে সে পুকুরের ফাইবার বোটটা পেতাম। বোটে করে আমাদের ওপারের ডায়রি ফার্ম থেকে গোবর আনতে হোত। শুকনা গোবর তবুও চলে সেভেন বা এইটকে দিয়ে কাঁচা গোবর আনানোর সিদ্বান্তটা ঠিক ছিল কিনা এটা সিনিয়রদের বা স্যারদের চিন্তা করা উচিত ছিল। |
Badrul Alam Khan,
1/
29
|
ঝিনেদা ক্যাডেট কলেজ - কয়েক টুকরো জীবননামাবদরুল আলম খান, ১/২৯ যশোর শহর থেকে ঝিনেদা ক্যাডেট কলেজ ৬০ কিলোমিটার দূরে । কলেজের সামনে পিচ ঢালা চওড়া হাইওয়ে কুষ্টিয়া গিয়ে শেষ হয়েছে । একশ মিটার দূরত্বে কলেজের দুটি নিরাপত্তা গেট । কলেজ ক্যাম্পাসের বিশাল এলাকা উচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা, এরই অভ্যন্তরে শিক্ষক কর্মচারী আর ছাত্রদের আবাসিক ঘরবাড়ি, ক্লাস রুম, প্রশাসনিক ভবন । কর্নেল মঞ্জুরুর রাহমান আমাদের কলেজের প্রিন্সিপ্যাল । তাকে কড়া অনুশাসনের মানুষ বললে সম্পূর্ণ বলা হয় না । সামরিক বাহিনীর শিক্ষা কোর থেকে সদ্য এসেছেন, চুল ব্যাক ব্রাশ করা, চোখে ভারি চশমা, তার অন্তর্ভেদী দৃষ্টির ভয়ংকরতা তা দিয়ে ঢেকে রাখা কঠিন । গোটা ক্যাম্পাস তার ভয়ে তটস্থ । কখন, কীভাবে, কোথা থেকে হাজির হবেন কেউ জানবে না । তবে একটি সুত্র, নিজে জানতেন কিনা জানি না, ঠিকই রেখে যেতেন । কিউবান চুরুটের গন্ধ পেলে বুঝতে হবে তিনি আশ পাশে কোথাও না কোথাও আছেন । সুন্দরবনে বাঘের উপস্থিতি নিরীক্ষণ করার মতো এ ছিল এক দারুন অভিজ্ঞতা । কলেজ প্রাচীরের ওদিকে তাকালে গ্রাম বাংলার রূপ, সুদুর প্রান্ত জুড়ে আম জাম খেজুরের বিচিত্র সমাবেশ । জানালার কাচ ভেদ করে পরনে জরাজীর্ণ প্যান্ট, হেঁটে যাওয়া বালক বালিকার দৃশ্য দেখতে পাই । তাদের বেশভুষায় দারিদ্রের প্রকট ছাপ । বইগুলি বগল দাবা করে প্রচুর শব্দের ঢেউ তুলে তারা তাদের প্রাতকালীন যাত্রা শুরু করে, এটিই তাদের রুটিন । কলেজের পাশের গ্রাম থেকে আসা একজন দারোয়ান আমাদের হোস্টেলের সামনে বসে পাহারা দিতেন, তার বয়স হয়েছে, দেহটাও মেদবহুল, গায়ের রঙ নিকষ কালো । অশীতিপর হলেও সাদা গেঞ্জি গায়ে চড়িয়ে সারা বেলা চাচামিয়া বসে কাটাতেন, মুখ চাপা দাড়িতে পরিপূর্ণ । দাড়ির ঘনত্ব আর বিস্তৃতির প্রতি আকর্ষিত হয়ে তাকে কার্ল মার্কস ডাকতাম । একদিন অভিযোগের সুরে বললেন, "স্যার ওরা আমাকে কালা মাছ বলে কেন" ? চাচামিয়ার গ্রাম নিয়ে অনেকের মনে ঔৎসুক্য ছিল বিশেষ করে আমাদের দুই বন্ধুর । একদিনের কথা বলি । রাত গভীর হয়েছে । সবাই যার যার বিছানায় শায়িত । - "এই ওঠ, সময় হয়েছে" । দুই বন্ধু অতি সন্তর্পণে ডরমিটরি থেকে বের হল । শীতের নিশিত রাত । সামনে ডাইনিং হল । সিঁদকাটা চোরের মতো পাচিরের ধারে এসে পৌছাল । এবার টপকাতে হবে । প্রথম বন্ধু : "এই, আমার পেছন দিয়ে পুশ কর" । কাঁচা রাস্তা, কিছুদূর হাটতেই বিস্তীর্ণ মাঠ । সারি সারি খেজুর গাছ । ছোট একটি গাছের কাছে যেতেই চোখে পড়লো ঝুলন্ত ভাঁড় । "নে, এবার গাছে ওঠ, জলদি কর" । খেজুরের রস কানায় কানায় । দুই বন্ধু ভাঁড় নিয়ে হলে ফিরে এলো । কমন রুমে আলোর সামনে আসতেই চক্ষু ছানা বড়া । "আরে একি ! রসের মধ্যে ওগুলো কি"? হ্যা তো, পোকা মনে হচ্ছে"? কি করা ? দুই জনেরই মস্তিষ্ক উর্বর, নিমেষে বুদ্ধি চলে এলো । ডরমিটরিতে ইতিমধ্যে নাসিকা গর্জন চলছে । "তুই বাইরে দাড়া, আমি ব্যবস্থা করছি" । পাশের বিছানার ঝুলন্ত মশারি, তার অর্ধেক কাটা শেষ । রস ছেকা হলো, নিমিষে তা গলধক্কন । সকাল হয়েছে । ঘুম থেকে উঠতেই ডরমিটরিতে হই হই রই রই কাণ্ড । মশারির এই দশা করলো কে ? মনে আছে, কলেজের ফুটবল টিম একবার স্থানীয় কেশব চন্দ্র কলেজে খেলতে গেছে । আমাদের মধ্যে চরম উত্তেজনা । চার দেওয়ালের বাধা ধরা গণ্ডি থেকে বের হওয়ার আনন্দের সাথে আরও ছিল বাইরের কলেজকে এক হাত দেখে নেওয়ার আগাম তৃপ্তি । খেলা শুরু হলো । পাশে বসা সহপাঠী আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "ও কে সি কলেজ ? ওটা আবার কলেজ হলো ?" খেলা শেষে ২/১ গোলে হার । আমাদের প্রিন্সিপাল সাহেবের মুখ শুকিয়ে কাঠ । খেলার কথাই যদি বলি তাহলে আর একটি গল্প বলি । আমাদের কলেজের বাস্কেটবল টিম মোমেনশাহী খেলতে গেছে । খেলার পর্ব শেষ । কলেজের আশ পাশে সান্ধ্য আড্ডা চলছে । টিমের একজন প্লেয়ার, মাথায় ভিন্ন পরিকল্পনা । সতীর্থকে ফিস ফিস করে কি যেন বলল । পাশে কলেজের ধোপার মোটর বাইক । ভট ভট আওয়াজ হল । নিমেষে অন্তর্ধান ! টাঙ্গাইল শহর । "এই যে ভাই, কি মিষ্টি বানিয়েছেন আজ ?" " স্যার, জিলাপি, রসগোল্লা, কালোজাম, রস মালাই আছে । ভালো হবে" । পেট ভরে রসগোল্লা খেয়ে আয়েসের সাথে দুজন ফিরে এলো । এবার টিমের সাথে কলেজে ফেরার পালা । পৌছতেই হাউজ টিউটর ডেকে বললেন "যাও, প্রিন্সিপাল কলেজ হসপিটালে থাকার আদেশ করেছেন" । দুই দিন না যেতেই বাবার ডাক পড়লো । বাবা এলেন । আদেশ এলো কলেজে থাকা চলবে না । বাসায় ফিরে মা বাবার বকানি । লেখাপড়ার কি হবে তা নিয়েও অসস্থি । ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে খবর এলো সেখানে হাজির হতে হবে । বন্ধু ড্রেস পরে বড় সালাম ঠুকে মেজর জেনারেল মুকিম খানের সামনে দাঁড়ালো । "স্যার আইনভঙ্গ করেছি । কানে ধরছি, আর করবো না" । এ যাত্রায়ও বৈতরণী পার ! কলেজে অভিভাবক দিবস, আমাদের বাবা মা ভাই বোনেরা এসেছেন অনেক দিন পর, আমাদের সাথে দেখা করতে । প্রিঞ্চিপাল সাহেব ঘুরে গেছেন । এবার বিদায়ের পালা । সালেকুজ্জামানের বাবা পুত্রের হাতে একটি পোটলা তুলে দিল । "যাও বাবা, এটা দিনে এক বার করে খেয়ো । শরীর ভালো থাকবে" । পুত্র পোটলা নিয়ে কাপবার্ডে যত্ন করে রেখে দিল । বন্ধুর নজর কিন্তু এড়িয়ে গেলো না । "মাহবুব, ঐ পোটলায় কি জানিস?" সালেকুজ্জামান এদিকে ওয়াশ রুমে । "নে খোল", হরলিক্সের কৌটা নিমিষে অর্ধেক । সালেকুজ্জামান ফিরে এলো । রাগে কৌটা আছাড় মেরে মেঝেতে ফেললো । ধূর্ত বন্ধুর কিছু এসে গেলো না । মেঝে থেকে তুলে সবটুকু উদরস্থ হল কাল বিলম্ব না করে । কর্নেল রহমানের কথা দিয়ে শেষ করি । তার মতো দক্ষ প্রশাসক আজ পর্যন্ত একজনকে দেখিনি । কাক ডাকা ভোরে বের হতেন । পরিধানে সাদা প্যান্ট, সাদা শার্ট আর সাদা কেটস । প্রথমে কলেজের ডাইনিং হল পরিদর্শন করবেন, ব্রেকফাস্ট সম্পর্কে খোজ, রুটিন করে ড্রিল দেখা, সবার পোশাক ঠিক আছে কিনা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে তারপর নিজ গৃহে প্রত্যাবর্তন । ব্রেকফাস্ট খাওয়ার ফাকে নাকে চিরপরিচিত চুরুটের গন্ধ, তিনি হাজির হয়েছেন, যাকে বলে একেবারে ঝটিকা আগমন । খাবারের মান চেখে দেখে পরীক্ষা করছেন আর আমরা সবাই বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে তাকিয়ে আছি । লেখাপড়ার ব্যাপারে তার ঠিকরানো উৎসুক্যের গভীর মাধুর্য ভোলার নয় । অসীম ধৈর্য নিয়ে সবার প্রতি খেয়াল রাখতেন । কলেজে পরীক্ষার ফল প্রকাশ পেলে বহুবার তার মনের অপরিসীম আনন্দ জল্প্রপাতের মতো ঝরে পড়তে দেখেছি । একদিন, কোন এক কাল মুহূর্তে পার্শ্ববর্তী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধারা তাকে অনেকটা জোর করেই এক মিটিঙে নিয়ে গেল । খবরটি যশোর ক্যান্টনমেন্টের সদর দপ্তরে পৌঁছাতে বিলম্ব হলো না । ১৮ এপ্রিল ১৯৭১ সালের পড়ন্ত বিকেলে প্রিন্সিপালের বাসগৃহের সামনে দুটি মিলিটারি জিপ জোরে ব্রেক কষে দাঁড়ালো । জিপ থেকে পাকিস্তানি মেজর নামলেন, সাথে কয়েকজন সেপাই । আমাদের প্রিন্সিপ্যালও নেমে এলেন । মেজর সাহেব বলেছিলেন, "স্যার আপনার সামনে দুটি পথ খোলা আছে । আপনি জীবন নিয়ে পালাতে পারেন । অথবা আপনাকে গুলির আদেশ রয়েছে" । প্রিন্সিপ্যাল সাহেব পালিয়ে যাননি । ক্যাপ্টেনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছিলেন, "আই ডোন্ট এবান্ডান মাই কলেজ জাস্ট লাইক দিস "। তার চিরশয্যা আবাসস্থলের পাশেই বরাদ্দ হয়েছিল । সেই শয্যার গায়ে এপিটাফ হিসেবে জীবনের শেষ সেই কথাগুলি লেখা আছে । পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাপ্টেন এবার ছাত্র হোস্টেলে গেলেন । সেখানে বাংলার অধ্যাপক এ হালিম খানের সাময়িক আবাসস্থল । তাকেও ঘর থেকে টেনে বের করে গুলি করলো । আজ অনেক বছর পর ভেবেছি, জীবনকে তারা এতো সহজ করে কীভাবে দেখেছিলেন ? কাপুরুষের মত প্রাণভিক্ষা চাননি । দেশপ্রেমে মোড়া সেই মনে অবিমিশ্যকারিতার কোন স্থান ছিল না । জানি না তাদের ভাগ্যে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এসেছিল কিনা । তবে না এলেও ক্ষতি নেই । সেই সুপরিচিত মুখগুলি প্রায়শ মনের পর্দায় ভেসে ওঠে । অতীতের সেই মুহূর্তগুলি আমার ধ্যানে আজও টিকে আছে, মনের একেবারে গভীরে । ক্যাডেট জীবনের কোন স্মৃতিই হারাবার নয় । |
Mahmud Ali ,
1/
42
|
From Project JCC to Jhenidah Cadet CollegeMahmud Ali, 1/42 In 1963, as the preparations for launching the country's second military school, Jhenidah Cadet College (JCC), built up steam, my father was appointed to the school's faculty. Later in the year I learnt my own efforts to secure a place in the first batch of cadets selected to join the institution had been successful. However, as the JCC "project" had a fairly long gestation period, we had to wait until early-1964 before staff quarters were ready and we could move in. When I arrived at the JCC campus, a few short months before the College formally opened to the very first intake of my fellow-cadets, the quadrangle was a large swathe of muddy, swampy and largely overgrown recently-cultivated plots. Of course, the JCC boundary wall, patrolled every night by an army of khaki-clad and stave-wielding guards, effectively separated these 100-odd acres from the low-lying rice paddies surrounding the establishment, and promised a very different world to be fashioned for the future of the nation's human potential. That particular promise lay in the distant future as we made home in the insect-filled corner of the campus close to the main gate leading off what became the Jessore-Kushtia highway. Very slowly, white and beige-coloured buildings took shape. Amid a cluster of bungalows housing the faculty, around a rarely-used tennis court, only the Principal's quarters were a two-storied house. Then, parts of the Academic Block, Badr House, the Dining Hall, and other staff quarters in the campus' opposite corner took shape, raising their heads in an incongruously urban prophecy of transforming a bucolic emerald sea of rice and jute. By the time the inaugural batch of cadets arrived and took up residence in Badr House, workers had drained and levelled the rice paddies to form the very early stages of football, rugby and cricket pitches, and delivered the promise of an even brighter sportsmanlike future. Of course, the cadets arrived in the middle of the monsoon season when rains and thunder-storms occasionally rendered active physical engagement impossible. We were then assigned to prepare the narrow Badr House 'garden' lying between the hostel's ground-floor verandah and the main campus road for planting grasses and flower-beds by more professional gardeners. The cadets' days were busy - starting with an early reveille, getting dressed for what was described as physical training. This entailed learning the basics of working in small squads, drilling and marching like toy-soldiers, running in groups and obeying orders barked out by Army NCOs. This was a totally new world for most of us. Meals were taken in the Dining Hall behind Badr House, at tables seating around ten cadets while some faculty-members sat at the "High Table" with several of the Prefects. We marched to the Academic Block for the morning Assembly and lessons, marching back to the House and Dining Hall area for milk breaks and lunch. After lunch, the mandatory rest-period proved most tiresome as many of us simply could not doze off in the bright, hot, afternoon. Some of us wandered off. Ansar (1/10) and I were often caught by the Duty Master, usually Mr David Dewari, and sent off on punishment drills. The most frequent patron of the "punishment dril" routine was Imdad (1/35), frequently seen running round a circular track under the watchful eyes of an Army NCO. I suspect he enjoyed running sweaty circuits in the field much more than trying to sleep after lunch. On Wednesday afternoons, we attended religious lessons in one wing of the Dining Hall, temporarily converted into a prayer hall. The religious teacher was especially outraged at a few laggards who failed to appreciate the beauty of the Arabic script and wasted everyone's time by playing silly games. Mollah Iqbal (1/8), Feroz A.K. Fazlul Halim (1/3) and yours truly featured in this rather disgraceful band, often seen being ordered to wriggle out of the window and stand in the noon-day Sun holding bricks in our upraised arms in punishment for our sins. Evenings were slightly better. Some of us had to be taught the intricacies of Maghrib prayers with only a handful of us managing to master the postural and linguistic details. Marching to the "prep-classes" was a bit like running the gauntlet as massed squadrons of large moths, drawn to the bright lights installed along the College Road at regular intervals, rose from the grasslands and paddies to dive-bomb on unsuspecting cadets. We squirmed and squealed but still tried to maintain our squad-discipline. Once in the safety of the class-rooms, some of us devoted ourselves to the serious intellectual labours our parents had sent us to school for. But a few always dozed off after a tiring day while others found boisterous ways to entertain themselves, and others, by singing, getting into fights, or just sauntering about the large building. Of course, the Duty Master would usually catch a few such defaulters, put them in their place, or assign them to the next day's punishment drills. It was a miracle that most of us managed to learn a thing or two almost every day. After dinner, we had about an hour left to ourselves, the only truly free period. Some used the meagre common-room facilities to memorise stories from Time, Newsweek and the Readers' Digest for next morning's "current affairs" questions which followed the morning Assembly. Others huddled around the lone radio set trying to listen to film music broadcast by such stations as Radio Ceylon. A handful monopolised the table-tennis set while eager cadets waited impatiently for their slots before the day ended. A few of us gathered on the Badr House balcony to entertain ourselves musically until it was time and the Duty Cadet began shouting, "Lights Out! Lights Out!!" Some kids cried in bed almost every night and it was very tough for them during the first couple of terms. I wasn't one of them, but I found myself in another small group of specially endowed cadets - the handful of bed-wetters. This did not happen every night - mercifully. But when it did, the next day, Mr Rouf, our first, and arguably the most effective and beloved House Tutor, would come down into the dormitory, go round the beds sniffing and with unerring accuracy, point to me - and a few others - just asking us to carry our mattresses to the roof next to his own quarters, and let the summer Sun do the trick, I often found myself in the company of my friend Shahjahan (1/2). Although a few others occasionally joined us, the two of us were the most consistent partners well into Class-VIII. I was truly grateful when this unwelcome routine ended well before the departure of Lt.Col. ND Hassan, our first Principal, and the arrival of Lt. Col. JSH Smitherman, our second. Colonel Smitherman brought in a series of innovative changes, expanding the range of our experiences with newly-established clubs and societies which not only diverted minds but also brought cadets from one batch in close social contact with those from others. These extra-curricular activities ranged from participating in sections of the newly-formed cadets' pipe-and-drum band to the Duke of Edinburgh's outdoor challenges scheme. I truly sucked at sports; I not only failed to win any trophies in any field or track events in my six years at JCC, I succeeded in consistently bringing up the rear of the class in our annual six-mile cross country races while I was there. This made me particularly anxious to make my mark in a different field. The newly-formed cadets' bagpipe band promised fresh opportunities. I was especially keen to become a bugler - bugles sounded so authoritatively defining at reveille and retreat that I was determined to master the appropriate skill-set. My instructor was an Army Corporal named Qubbat Khan (or thereabouts). He had trained as a professional bugler in the Army and took great pride in his craft. Like all soldiers, he acted a bit like a stiff robot and I found his movements rather funny. My failure to contain laughter when he was sharing his most cherished bugling insights so angered him that I was thrown out of his circle on the first day. I then tried drumming. Tenor drums looked attractive and when other kids were doing so well with them, I felt confident I could, too. Our instructor, Army Havildar Hafiz, almost as diminutive as I am, was a firebrand soldier. He saw through my efforts to fit into the musical fraternity as insincere and threw me out on my second day. I then befriended Ismail (1/14), the Bagpipe-Major-designate and a master of the octopus-like Scottish instrument. Ismail tried his best to impart his wisdom on skirling music and then handed me over to Havildar Hafiz of the drumming episode. Ustad Hafiz tried to teach me Scottish tunes like Sky Blue (which he called "Sookai Bulue") and such like with Herculean determination and tenacity. Sadly, the noises emanating from my bagpipe convinced both of us that bagpipes were not my future. It was only then that Col. Smitherman took pity and invited me to join his model-train society fashioned around the massive and complex model-railway system he'd imported from the UK for our benefit. I have to admit that it was not all fun and games in these first few years at the JCC. The early, tragic, untimely and accidental death of one of our fellow-cadets while travelling from Jessore Airport to the campus was a horrifying experience for everyone. Personally for me, the most memorable experience had to do with the establishment of the new library behind the large auditorium in the Academic Block. Mr Shafiq-ul-lah (later, Lt Colonel), our favourite Bengali teacher, who had studied the Dewey Decimal System of Classification at university, supervised the forging of this remarkable collection of books, to which I was drawn immediately. Being especially poor in physical skills, I found a powerful sanctuary in this treasure trove of words and imagery. One afternoon, as I was approaching the Library, I noticed a bicycle leaning against the wall of the auditorium. It was simply impossible for me to temper the temptation of stealing a ride. Sadly, the verandah running along the Auditorium's side to the Library was rather narrow and while I enjoyed my brief ride along it for a short spell, when I saw the Principal, Lt. Col. N.D. Hassan, and Mr Shafiq-ul-lah emerge from the Library and stare at my wobbly, unauthorised, cycling show in disbelief, I lost my balance, fell against a window pane, cracked it, and slit a minor artery on my right fore-arm. It began bleeding like a freshly-slaughtered chicken and the good Colonel, acting decisively, asked me to pinch the cut, dragged me to his car clutching my arm and drove me to a hospital in Jhenidah town. There, illuminated with a hurricane lamp, a doctor cleaned up and stitched the gash, leaving me with a crucifix-shaped mark of identification for the rest of my life. This story was never, to my knowledge, publicised and I carry the scar as my first genuine, permanent, marker of my JCC life. It was just one of many experiences which shaped the person I became and the life I have lived. On the great occasion of The 56th College Day (23rd July 1964); One of the 4 part series of Articles. |
Mudassir Hossain Khan ,
1/
34
|
Liberation War and Me - A Quick Ride BackMudassir Hossain Khan , 1/ 34 1971 - The Year that was like many others, I consider myself fortunate to have graduated from High School in Jhenidah Cadet College with the 1st Intake in 1970. My childhood dream of choosing Teaching as my lifetime profession was dashed as providence had something else in store for me. I landed up in the Army to become a Military professional. Being selected through due process, I along with a number of my classmates joined PMA(Pakistan Military Academy) in Kakul, Abottabad, to be commissioned as officer after 2 years of rigorous training in a Dungeon, they mysteriously choose to call an Academy. Like most of my classmates, I wasn't doing too bad ensuring my position in the top few of the Course as we were determined to prove, not only the Bengalis but JCC had talents as well. As a display of JCC's ability to outclass the performance of the then West Pakistanis, it wouldn't perhaps be out of place to mention that I was declared the Best Debater of the Academy as the junior most cadet and also a Bengali, only when I was in the 2nd term of the Course. However, Allah STW had something else in mind. My training in PMA turned out to be an essential prerequisite and perhaps a launching pad for my engagement in something more glorifying than serving the infamous Pakistan Army. Saddened, infuriated and at the same time devastated at the news of the crackdown by Pakistan Army and the gruesome killing of innocent and defenceless civilians in Bangladesh, I, along with few of my course/classmates realized that Pakistan Army was not the place for us to serve any more. It was therefore time to desert and join the Liberation War on the side of newly declared independent Bangladesh. For the plan to succeed, it called for speedy execution. I had therefore, approached a number of Bengali cadets and Instructors for support and guidance. The response was not encouraging. Majority of those contacted, had advised against making such a dangerous move. Being determined and standing firm on the irreversible decision, our group of 7-8 left for the town Abottabad on a weekend in the month of May,1971. Arriving at the town, the group split and half among us decided to fall back to the Academy finding the game too risky. In the Course of our attempts to cross over to India touching upon Lahore, Islamabad and Karachi, the final team was reduced to only 3. Besides me, the other two members were, LT COL Mahabub(retd), Bir,Protik from my own course and Shaheed (martyr) LT Emdadul Haque, Bir,Uttam from 46th PMA long course. Having gone through a number of abortive attempts and with the help of Allah SWT, three of us at long last took the desperate decision and also managed to cross over to Dhaka in disguise in late May 1971 on board a PIA flight. Making a brief stoppage for only two days in Dhaka, we crossed over to Agartola, India, on foot encountering few skirmishes with the occupation army. My only action before departure from India was to handover a small handbag to my classmate Imdad in Shantinagar with instruction to drop it in my uncle's house at Dhanmondi only after I cross over to India. To our joy, we met the liberation forces and were all inducted into 8 East bengal regiment under "Z" force, the regular brigade, commanded by COL Ziaur Rahman. The 8 East Bengal and the "Z" force being based in Teldhala, Meghalaya, I had undertaken a number of small and large operations as a company commander throughout the North Eastern belt spanning across Rangpur, Sylhet, and Mymensingh. Important battles fought by me were in Chilmari in Rangpur, Nokhshi in Mymensingh, Latu, Damai, Shagornal Tea Garden and Zakiganj, Kanaighat in Sylhet. On completion of the war, I entered Sylhet town in jubilation on 16th December, 1971 along with my battalion. I was awarded "Bir Protik" in recognition of my gallantry contribution in the liberation war. I was also formally commissioned as an officer in Bangladesh Army along with my other compatriots having gone through a short period of training and also awarded the first Sword of Honor in newly independent Bangladesh having been declared the best all round officer cadet. In conclusion, I hasten to state that, while I regard myself as one of the fortunate fews to have escaped from Pakistan and fought in the battle front, I firmly believe all Bangladeshis including those who were stranded in Pakistan had also participated in the liberation war. My conviction is the result of my belief that each and every Bengali had his heart and soul involved in the independence movement during the liberation war, even if he had failed to participate directly in the war for circumstances beyond his control. On the great occasion of The 56th College Day (23rd July 1964); One of the 4 part series of Articles. |
Shafiqur Rahman,
1/
36
|
Days of Our Lives1. 1st day at JCC: I arrived at JCC in early afternoon with some trepidation. My mother had heard that there would be scores of smart kids coming from Dhaka who attended English medium schools and spoke fluent English. She was convinced that I couldn't compete with them because I had always attended Bengali medium schools, and especially because we'd have to speak only in English at JCC. There was only one house then-- Badr House (BH). As I entered the Common Room, where 'check in' was in progress, I witnessed a strange scene. A person, clearly of the age of one of our teachers, was holding an open suitcase with his hands. (As I found out the next day, this was Mr. Shafiqullah, our Bengali teacher.) Standing in front of him was a smallish boy (Meer Aminul Bari, 1/5) with horror in his eyes. I saw the open suitcase go slightly up and then down, landing on the floor with a thud. Out came two guavas. They rolled over the floor-- the slight irregularities of their surfaces sending them into a nonlinear trajectory despite the smooth cement floor. I also heard what sounded like a growl. It was composed of some words, but this beginning that greeted me was so unexpected that the neurons in my brain went into a slow-motion-mode quite different from the standard human reaction time of 1/7 of a second. Till this day, I wonder whether the pain in Bari's eyes was in anticipation of the state of his suitcase after it would land or bearing witness to the loss of the four guavas he had so carefully hidden among the clothes in his suitcase. It was my turn for inspection a little later. Despite my mother's recommendation, my father had nixed the idea of packing some fruits in my suitcase because the instructions from JCC clearly asked us not to bring any food items. So I felt calm, akin to what one might feel when one goes out after a terrible cyclone - you feel calm because you know that the worst is over. Later, I heard that Bari wasn't the only one in mourning-- several other confiscations, including apples and lots of different kinds of food, had taken place during the check in. Interestingly, Mr. Shafiqullah became one of our favorite teachers at the college. Someday, I'll write about those stories. There were lots of tears that day - Shahjahan (1/2) sobbing profusely right in front of everyone, Humayun (1/6) trying to control his emotion but utterly failing at it and Hafiz (1/45) breaking down as his father left. And when the lights went out at 10 PM, there were lots and lots of misty eyes. The profound sanctity of darkness cannot be minimized - it has the benefit of allowing our most personal secrets to be kept from others. 2. Trousers vs Full-pants: Within a week after we arrived, it became clear who were 'citi boys' and who were from 'elsewhere'. Standard name given to the latter group was 'মফসà§à¦¸à¦²' and '__ '. Trousers played an important role in this sorting process. We were asked to bring two 'trousers' with us, preferably white in color. Imtiaz (1/16) and I speculated on the meaning of this word but couldn't reach a consensus. I had met him during the entrance exams for JCC. We were from neighboring towns. A dictionary seemed to suggest that 'trousers' was simply another word for fullpant. Imtiaz alerted me at the last moment that a trouser is a full-pant without any crease (fold) at the bottom. I think his father called JCC and found this out. Imtiaz quickly got two trousers tailored and brought these with him as recommended by JCC. The city boys were donning their white 'trousers' aka 'full-pants without any crease/folds at the bottom' in full glory right from day one. Unfortunately, when I was alerted by Imtiaz, I felt that my parents didn't have the means to pay for two brand new 'trousers'. So I came with one blue full-pant and one green full-pant, i.e. both with creases at the bottom. The blue one was a trifle short because it was stitched a year ago and I had grown a little taller meanwhile. I was constantly trying to pull it down so it wouldn't appear to be short, but somehow, in total defiance of Newton's law of gravity, it would quickly slide 'up' exposing my socks and proving to the entire universe that it was a bad fit. The green trouser, on the other hand, was a hand-me-down from my elder brother. It was very wide on the bottom and loose at the top, probably because the Bengali sentiment couldn't allow any amount of clothing material to be wasted when it was stitched. Cadet 1/X (I'm keeping his identity a secret) probably doesn't remember this any longer, but his remark with a sly smile on his face, when he saw me with the green trouser for the first time, left no doubt that even though I came from Khulna, which was considered to be a city, my background was clearly that of a __. I don't remember the exact words that he used, but it went something like 'an elephant could easily fit through the opening of your fu- l-l--p-a-n-t'. To add insult to injury, the ready-made trousers from the college didn't fit me. So the college tailor had to take my measurements, and in about two weeks, I got my white trousers. It's only then that my constant nightmare with trousers was over. Cadet 1/X shouldn't feel bad - I remember these incidents with great fondness. It was all part of our growing up. Also, time has the wonderful property that it makes one forget the pain and the suffering - only the good parts remain in memory. 3. Khaiber House: The following year, when the 2nd intake came, we were divided into two Houses, Badr, the original House, and Khaiber, the new House - the names coming from important battles in Islam. I was assigned to Khaiber House (KH). We heard rumors that the assignments of the cadets to the two Houses was done on the basis of academic result after the first year, with Khaiber getting Number 1, Badr getting Number 2, then Khaiber getting Number 3, and so on. In reality, that was not the case. Further, we quickly realized that KH was no match for BH in terms of athletic ability. It wasn't clear to us why the distribution of cadets was so lopsided in favor of BH. Also, to compensate for KH getting the Number 1 of the 1st intake, the top student of 2nd intake, based on the written admission test, was given to Badr, Khaiber getting the second, and so on. Surprisingly, after the first exam, Numbers 1-3 from the 2nd intake were from KH. In fact, in terms of academic results both after the first term and the final exam, the result was lopsided in favor of KH. I heard that the House Teacher of BH, Mr. A. Rouf, lobbied heavily with the Principal. As a result, the top ten tudents (academically) of the 3rd intake were assigned to Badr, the next ten to Khaiber, and so on. Surprisingly, and confounding everyone, those from Khaiber again did much better in the exams. I have some insight about how this came about. If you watched the front of the two Houses in the afternoon, you'd notice a very big difference. The front of BH had many juniors getting punished by seniors'little kids of seventh and sometimes eighth grades having to crawl on the rough asphalt road. Some of them would be bleeding because they lost skin from the corner of the elbows. KH was different. I don't recall making any junior cadet crawl of the rough road, ever. Further, we allowed the juniors to study after lights-out and also helped them with their studies. Many of us would sneak into the common room and work there. Fortunately, because of the orientation of KH, one couldn't see the lights in the common room from the Principal's house. That wasn't true of BH. We also made friends with the guards so that in the event the Principal would come toward the houses (one could see the lights of Principal's car easily from BH, but not from ours), they would alert us. Even our House Tutor, Mr. Murshed, was helpful - he would come down for inspection after 11PM,instead of 9 (for juniors) or 10 (for seniors). By then, everyone was really in bed. Before the SSC exams, we'd study in our rooms even later. We put newspapers in the ventilators and blankets against the windows so that light couldn't be seen from outside. A couple of times, Mr. Morshed alerted us "à¦à¦‡ , লাইট ___া যায়". We worked as a team with the juniors and encouraged everyone to think outside the box, especially in connection with the Current Affairs competition. During my stay at JCC, Khaiber House was the unbeaten Champion in Academics and Current affairs each and every year. BH and Hunain House bet us squarely in athletics. However, in the last year of my stay in JCC, we were the Champion House. In fact, we did mathematical modeling and calculations to increase our total points in athletics by strategically placing our athletes, taking a small loss in one event for a big gain in another. The evening before the final day, we showed our House Master, Mr. A. Robb, that even in the worst possible case in athletics the next day, we'd win the Championship. You should have seen the expression of disbelief turn to a broad smile on Mr. Robb's face! But that's a story for another time. At my age, there has been time to reflect on what I gained from JCC. That understanding didn't come when we were there; that was a carefree time of joy and laughter, a time of developing deep friendships that will last a lifetime. Today, looking back, the most important thing JCC gave me was a broad based education that enhanced the quality of my life. We want an engineer not to just build roads and bridges - he must think about the effect of his work on the people who live around his projects. That kind of broad outlook, infused with awareness of what is happening in the world, is an education very few people in Bangladesh are able to get. We were so lucky. Thank you, all my teachers. Thank you everyone else who helped to mold us into what we are today. Thank you JCC. On the great occasion of The 56th College Day (23rd July 1964); One of the 4 part series of Articles. |
Dr. Faridul Islam,
6/
322
|
Inter Cadet College Football Championship 1975 and our pillow fightWe, the 6th intake, were in class eleven. Inter Cadet College Football Championship took place in Momenshahi Cadet College (MCC). Firoz Khan Chowdhury (5th Intake) was in class twelve and our Captain. From our class (6th Intake) were Nurullah Siddiqui (319), Shafiullah (288), Matiur Rahman (307), Ekramul Kabir (335), Mahbubul Alam (277), Nurul Islam (Bhatiza,284) and myself (322). Nurullah was the links man (Libero). Sahfiullah (defence) and Farid (me, forward) were the gentlemen on the ground. Nurul/Bhatiza (defence) was the shortest but the most dangerous one among us. He would very often say words to an opposite forward player like these: "If you again try to make a goal, I shall send you to hospital". Many times they did not go to hospital but, I am sure, they had body pains for days together. We were four teams from four cadet colleges. The other three were Momenshahi (MCC), Rajshahi (RCC) and Fouzdarhat (FCC). Our team was runners up and MCC won the championship. Naturally, nobody was satisfied with this result. We were of the opinion, specially Nurul, that MCC manipulated the referee and won the championship. Nurul came to us with a new idea at the last evening of our stay in MCC. He organised a pillow fight at that night. We cleaned the floor and hid the damaged pillows under the quilts and bed sheets as soon as our pillow fight was over and a lot of pillows damaged. He requested us to go to bed earlier or at least in time, leaving behind a very gentleman like impression. We woke up very early next morning, went to breakfast just in time and took our belongings to our college bus which was waiting in front of the house for us. Mr. Eberuddin (he was our teacher in charge) was a bit surprised to see the timing and discipline of our room. He praised us that we left the dormitory very neat and clean just as the bus started leaving the college. We knew that Mr. Eberuddin got the information later from MCC, but he did not ever talk on this topic with us. |